নিউজ ডেস্ক: এ এক তাজ্জব বিষয়। রাজ্যের বিভিন্ন জেলে মহিলা কয়েদিরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন। প্রশ্ন উঠছে জেলে থাকা মহিলা কয়দিদের সুরক্ষা নিয়ে। হাই কোর্টে সম্প্রতি আদালত বান্ধবের জমা দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারে ১৯৬ জন শিশু জন্ম নিয়েছে। সম্প্রতি, আলিপুর মহিলা জেলেও এক জন কয়েদি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। ফলত এমন ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। জাতীয় মহিলা কমিশনের অনুসন্ধানকারী দলের সদস্যরা ইতিমধ্যে রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গেও কথা বলেছেন বলে জানা যাচ্ছে। অর্থাৎ, স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে বিস্ফোরক তথ্য সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে, তা মোটেই হালকাভাবে দেখছে না জাতীয় মহিলা কমিশন।
প্রসঙ্গত, সংশোধনাগারে থাকাকালীন মহিলা বন্দিদের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার ঘটনায় আগেই স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। মামলায় সিনিয়র আইনজীবী গৌরব আগরওয়ালকে আদলত বান্ধব হিসেবে নিয়োগ করে বিচারপতি আসানুদ্দিন আমানুল্লা এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার সেই মামলায় একটি রিপোর্ট পেশ করে মহিলা সংশোধনাগারগুলির জন্য একাধিক সুপারিশ করেছেন গৌরব। আদালত বান্ধব জানিয়েছেন, মহিলা সংশোধনাগারগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হোক। পাশাপাশি বন্দিদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থাও করা হোক। সাজাপ্রাপ্ত বা বিচারাধীন অবস্থায় মহিলা বন্দিদের জেলে প্রবেশের সময় তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার সুপারিশও করেছেন গৌরব।
এই ঘটনার ফলে গর্ভস্থ অধিকাংশ ভ্রুনের পিতৃত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন হাইকোর্টের মামলায় নিযুক্ত আদালত বান্ধব। এই ভয়ঙ্কর অভিযোগ নিয়ে হইচই পড়ে যেতেই মুখ খুলেছেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি। তাঁর বক্তব্য, এই ধরনের কোনও অভিযোগ তাঁর দফতরে আসনি। পাশাপাশি কোনও নির্দিষ্ট সংশোধনাগারের কথা উল্লেখ করা হলে, সেটিও দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অখিল গিরির যুক্তি, রাজ্যে বর্তমানে চারটি মুক্ত সংশোধনাগার রয়েছে (যেখানে আবাসিকরা তাঁদের পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারেন)। যে ঘটনার কথা বলা হচ্ছে, সেগুলি সেখানে ঘটেছে কি না, সেটাও দেখা প্রয়োজন বলে মত কারামন্ত্রীর। আলিপুর ছাড়া বাকি সর্বত্র যে মহিলা ও পুরুষ আবাসিকদের আলাদা সেল রয়েছে, সে কথাও মনে করিয়ে দেন মন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন,কোনও সাজাপ্রাপ্ত আবাসিক সংশোধনাগারে আসার আগেই হয়তো গর্ভবতী হয়ে এসে সন্তান প্রসব করেছেন। সংশোধনাগারের মধ্যে মহিলা এবং পুরুষ কোনোমতেই মেলামেশা করা সম্ভব নয়। তাহলে কিভাবে ঘটছে এই ঘটনা ,জেলের ভেতরেই কি রয়েছে এই ঘটনার আসল কর্মকর্তা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সবার নজর এড়িয়ে এমন ঘটনা বারংবার কারা ঘটাচ্ছে , কারাই বা এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।