নিজস্ব প্রতিনিধি,পূর্ব বর্ধমান: আধার কার্ড
‘ডিঅ্যাক্টিভেট’ বা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে বলে গত কয়েকদিন ধরে ডাকযোগে এমন চিঠি
পেয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের বহু পরিবারের বাসিন্দারা। কিন্তু সেই
চিঠির বয়ানে কারণ হিসেবে যা লেখা হয়েছে, তাতে মাথায় হাত
পড়েছে তাঁদের।চিঠিতে উল্লেখ, আধার কার্ডের ২৮-এ রেগুলেশনে
আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। মূলত বিদেশি বলে সন্দেহ বা বাসস্থান সংক্রান্ত
নথি সন্তোষজনক না হলে এই ধারায় আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হয়। চিঠি হাতে পেয়ে
চরম আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বৃহস্পতিবারেই বিধানসভায়
দাঁড়িয়ে এনিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায় আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, উত্তরবঙ্গের
চা বাগান শ্রমিকদের আধার কার্ড বাতিল হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, আমি প্রশাসনকে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছি। সঙ্গে তিনি যোগ
করেছেন, কত টাকা দিয়ে ঘুরে ঘুরে আধার কার্ড করেছে মানুষ।
নির্বাচন আগেই আমি শুনলাম চা বাগানের অনেকের আধার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। শুনেছি
আধার কার্ড নাকি বাতিল করে দিতে বলেছে, যাতে মানুষ ভোট দিতে
না পারে।
তারপরে শুক্রবার সকালেই জামালপুর ব্লকের জৌগ্রাম, আবুজহাটি এলাকায় প্রায় ৬০ জনের কাছে ডাকযোগে ‘ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন
অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার রাঁচির আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। গত
কয়েকদিন ধরে এই ব্লকের আবুজহাটি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জুহিহাটি গ্রামের প্রায় ৫০
জন এমন চিঠি পেয়েছেন। জৌগ্রামের অনেকের কাছেও এই চিঠি এসেছে। পোস্ট অফিস সূত্রে
খবর, এই ধরনের কয়েকশো চিঠি এসেছে। অনেকেই নাগরিকত্ব হারানোর
আতঙ্কে কাউকে বিষয়টি জানাননি।স্থানীয় বাসিন্দা প্রিয়া সরকার, পুতুল সরকার, বিপুল বিশ্বাস, লিপিকা
বিশ্বাসদের দাবি, কেন এভাবে আধার কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেট হয়েছে
বুঝতে পারছেন না। এমনকি তাঁদের রেশন, ব্যাঙ্কের লেনদেন-সহ
আধার নির্ভর কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলেও জানান তাঁরা। বিপুলের কথায়, কয়েকমাস আগেই আধারের সঙ্গে প্যানকার্ড লিঙ্ক করেছি। তখন কোনও সমস্যা
হয়নি। হঠাৎ করে কী ঘটল, বুঝতে পারছি না।
জামালপুরের বিডিও পার্থসারথী দের সাথে যোগাযোগ
করা হলে তিনি জানান, ব্লক প্রশাসনের কাছে এই বিষয়ে
কেউ কোনও তথ্য চায়নি। তিনি বুঝতে পারছেন না কেন এমনটা হয়েছে। আধার নিষ্ক্রিয়
হওয়ার চিঠি আসার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কাছেও খবর এসেছে।