নিউজ ডেস্ক: রেলপথ সংযোগেই বদলে যাবে সিকিমের জনজীবন। প্রভাব পড়বে রাজ্যের অর্থনীতি ও জাতীয় সুরক্ষায়। নেপাল ও ভুটানের মধ্যে অবস্থিত ভারতের ছোট্ট রাজ্য সিকিম। সিকিমের উত্তরে রয়েছে চিন সীমান্ত। কিন্তু এতদিন ভারতের এই রাজ্যে কোনও রেলপথ ছিলনা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে সড়কপথে গাড়ি করেই যেতে হত সিকিমে। তবে এবার পশ্চিমবঙ্গের সেবক থেকে সিকিমের রংপো পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে রেলপথ। এই রেলপথ চালু হলে ওই এলাকার যাতায়াতে অভাবনীয় পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি বেশ কিছু কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে উঠতে পারে এই রেলপথ।
এই রেল পথ চালু হলে ওই এলাকার অর্থনীতিতে যেমন প্রভাব পড়বে তেমনই দেশের সৈন্যদের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে এই নতুন রেলপথ।
এই রেলপথ তৈরির কাজ সম্পন্ন হলে সাধারণ সিকিমবাসী রেলপথ ব্যবহার করতে পারবেন। আর ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে এটাই হয়ে উঠবে অন্যতম যোগাযোগের রাস্তা। কারন সিকিমের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে চিন সীমান্ত। সিকিম শেষ হলেই চিনের এলাকা শুরু হয়ে যায়। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে এই এলাকায় বিশেষ নজর থাকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর। যেকোনো জুরুরি অবস্থা তৈরি হলে দেশের প্রতিরক্ষার জন্য আগে থেকে রয়েছে শিলিগুড়ি করিডর যা সেনাবাহিনীর যাতায়াতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই রেলপথ তৈরি হলে সেনার যাতায়াত ও যুদ্ধ সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়াও সহজ হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
শুধু দেশের প্রতিরক্ষাই নয় পাশাপাশি এই রেলপথ তৈরি হলে উন্নত হবে যাতায়াত ব্যবস্থা, যাকে ভিত্তি করে সহজ হবে ব্যবসা বানিজ্য ও পর্যটন শিল্প।
সেবক ও রংপোর মধ্যে সংযোগকারী রেললাইন নির্মাণ হচ্ছে একাধিক টানেল ও সেতুর মধ্যে দিয়ে। ১৪টি টানেল ছাড়াও থাকছে ২২টি ব্রিজ। এই লাইনে মোট পাঁচটি স্টেশন থাকবে। এর জেরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিকিম যাওয়া অনেক সহজ হবে। পাশাপাশি পণ্য পরিবহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন এই রেলপথ। উল্লেখ্য বর্ষার সময় ধসের জেরে সিকিমগামী যে এক মাত্র জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে সেই অবস্থাও বদলে যাবে এই রেলপথ তৈরি হলে।
উল্লেখ্য সেবক-রংপো রেল প্রকল্পের দ্বিতীয় বৃহত্তম টানেলের ‘ব্রেক-থ্রু’ সফলভাবে ঘটেছে। কিছুদিনের মধ্যে টানেলটির মধ্যে রেললাইন পাতার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন নির্মাণকারী সংস্থা এবং রেলের পদস্থ কর্তারা। এদিকে, সেবক স্টেশনের থেকে টানেল পর্যন্ত রেললাইন টেনে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। শিলান্যাসের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেবক টানেলের দুই প্রান্তের সংযোগ ঘটালো রেল।