বাম আমলে ২০১০
সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারি বিনপুর থানার শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলার ঘটনা
ঘটে। ওই হামলায় ২৪ জন ইএফ আর জওয়ান এর মৃত্যু হয়, আহত হয়
৫ জন। মঙ্গলবার মেদিনীপুর আদালতের ষষ্ঠ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সেলিম শাহী শিলদা
মামলায় ২৩ জন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন। বুধবার তার মধ্যে ১৩ জনের সাজা
ঘোষণা করেন মেদিনীপুর আদালতের ষষ্ঠ
অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সেলিম শাহী। ওই ১৩ জনের মধ্যে রয়েছে মাওবাদী নেতা বিকাশ
ওরফে মনসা রাম হেমব্রম ও তার স্ত্রী তারা ওরফে ঠাকুর মনি হেমব্রম সহ কল্পনা মাইতি,
কাজল মাহাতো, মঙ্গল সরেন ,সনাতন সরেন, শুকলাল সরেন ,কানাই
হাঁসদা, রাজেশ হাঁসদা, শ্যামচরণ হাঁসদা,
রাজেশ মুন্ডা ,ইন্দ্রজিৎ কর্মকার ও মানস
মাহাতো। শিলদা মামলায় অভিযুক্ত বাকি দশ জনের সাজা বৃহস্পতিবার ঘোষণা করবেন
মেদিনীপুর আদালতের ষষ্ঠ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সেলিম শাহী। বুধবার শিলদা মামলায়
অভিযুক্ত ওই ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি দশ হাজার করে টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। সেইসঙ্গে
ওই তেরো জনকে দশ হাজার টাকা জরিমানা
অনাদায়ে আরও তিন মাস জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। তবে যাবজ্জীবন সাজা
ঘোষণার পর শালবনি ব্লকের বেলাশোল গ্রামের বাসিন্দা মানস মাহাতোর স্ত্রী নমিতা মাহাতো বলেন ১৪ বছর
জেলে বন্দি তা সত্ত্বেও যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হল তার স্বামীকে। রাজ্যে ক্ষমতায়
আসার পর বন্দীদের মুক্তি দিবেন বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু মুক্তি দেওয়ার বদলে যাবজ্জীবন সাজা দিল।সেই সঙ্গে তিনি বলেন এখন কিভাবে
সংসার চলবে তা বুঝে উঠতে পারছি না এই কথা বলার পর তিনি আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে
পড়েন। মাওবাদী নেতা বিকাশ বলেন সিপিএম সরকার অ্যারেস্ট করেছিল, তৃণমূল কংগ্রেস সরকার যাবজ্জীবন সাজা দিল। যারা সাক্ষী দিয়েছে তারা সবই
সাজানো লোক বলে তিনি অভিযোগ করেন । যখন আদালতে বিচারক শিলদা মামলায় তেরো জনকে
যাবজ্জীবন সাজা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে তখন
আদালত চত্বরে এপিডিআর সংগঠনের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখায়। সেই সঙ্গে সাজা প্রাপ্ত দের পরিবারের লোকেদের অভিযোগ মাওবাদী নেত্রী সুচিত্রা
মাহাতো, জাগরী বাস্কে শিলদা হামলার ঘটনায় যুক্ত, অথচ তারা মুক্তি পেতে পারে, কিন্তু যারা নির্দোষ
তাদেরকে আদালত যাবজ্জীবন সাজা দিল। যার ফলে শিলদা হামলার ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত দের
পরিবারের লোকেরা আদালত চত্বরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।