নিউজ ডেস্ক: মহাশিবরাত্রি বা শিবরাত্রি হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দুধর্মীয় উৎসব। এই মহাশিবরাত্রি ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয়। মহাশিবরাত্রি হল হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ আরাধ্য দেবাদিদেব মহাদেব ‘শিবের মহা রাত্রি’। শিব পুরাণ অনুসারে, এই রাত্রেই শিব সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন। আবার এই রাত্রেই শিব ও পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল। তাই ফাল্গুন মাসকে শিব-পার্বতীর বিবাহ মাস হিসাবে ধরা হয়। এই মাসে শিবের পুজো বিশেষভাবে আয়োজিত হয় শিবরাত্রির দিন। সেই পবিত্র দিনটিতে শিবের পুজোতেও থাকে বিশেষ আয়োজন। শিবরাত্রির দিন দিনভর চলে নানা রীতি। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, অবিবাহিত মেয়েরা শিবরাত্রি করলে মনের মতো বর পায় । বিবাহিতদের বৈবাহিক জীবন সুখের হয় ।
এছাড়াও শিবঠাকুরের আরাধনা করলে জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধি হয় বলে মনে করা হয়। এছাড়াও অনেক ধরনের গ্রহ দোষও দূর হয়। শাস্ত্রে বলা হয়েছে মহাশিবরাত্রির দিনে শুভ সময়ে ভগবান শিবের আরাধনা করলে সব ধরনের মনস্কামনা পূর্ণ হয়।
প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মহাশিবরাত্রি পালন করা হয় । সারাদিন-রাত উপোস থেকে মহাদেবের মাথায় জল ঢেলে শিবরাত্রির ব্রত পালন করেন ভোলেনাথের ভক্তরা । এবছর ৮ মার্চ পড়েছে শিবরাত্রি। এই তিথির ভিতর চার প্রহরের পুজো অত্যন্ত শুভ। পঞ্জিকা মতে তিথির সময় – ৮ মার্চ রাত ৯ টা ৫৭ মিনিট থেকে ৯ মার্চ সন্ধ্যে ৬টা ১৭ মিনিট।
শাস্ত্রে বলা হয়েছে, মহাশিবরাত্রির দিন সাধারণত চার প্রহরে শিবের আরাধনা সম্পন্ন হয়। মহাশিবরাত্রির দিন প্রথম প্রহরের উপবাস ও পুজো শুরু হবে সন্ধ্যে ৬টা ২৫ মিনিটে, দ্বিতীয় প্রহরের পুজো ও উপবাস শুরু হবে রাত সাড়ে ৯টায়। এরপর তৃতীয় প্রহরের পুজো শুরু হবে রাত ১২টা ৩১ মিনিটে এবং শেষ ও চতুর্থ প্রহরের পূজা শুরু হবে ভোর ৩টা ৩৪ মিনিটে। মহাশিবরাত্রির ব্রত ও উপবাস সমাপ্ত হবে ভোর ৬টা ৩৫ মিনিটে। পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, ৯ মার্চ সকাল ৬টা ৩৭ মিনিট থেকে দুপুর সাড়ে ৩টার মধ্যে মহাশিবরাত্রির উপবাস ভাঙতে পারেন শিবভক্তরা।
মহাশিবরাত্রির দিন মহাদেব ও পার্বতীর আরাধনা করারও রীতি রয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই বিশেষ দিনে শিব-পার্বতীর আরাধনা করলে সমস্ত সিদ্ধিলাভ হয়। কেটে যায় জীবনের সমস্ত সমস্যা। পাশাপাশি এদিনে শুদ্ধচিত্তে পুজো ও উপবাস রাখলে দাম্পত্য জীবনেও সুখ-সমৃদ্ধি বয়ে আসে।