এবার কি ইঙ্গিত দিয়েই দিলেন অর্জুন? সকালে
অর্জুন সিংএর অফিস থেকে সরানো হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। দুপুরে তাঁর দফতরে বসল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি। খবর
পেয়েই মানভঞ্জনে যাওয়ার কথা জানালেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক। দলের
তরফে অর্জুনকে ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সূত্রের খবর অর্জুনকে তাঁর খাসতালুক ব্যারাকপুরের
বাইরে বরানগরে বিধায়ক পদে প্রার্থী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। জিতলে মন্ত্রীত্ব দেওয়ার
আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রস্তাবকে ললিপপ যাওয়ার আখ্যা দিয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ।
পার্থ ভৌমিক এদিন সংবাদমাধ্যমে বলেন “বার বার দলবদল করলে মানুষ বিশ্বাস করবে না”। যদিও
ক্ষোভ বাড়ছে তৃনমূলে। অর্জুনে থেমেই নেই সেই সংখ্যা। সেই তালিকায় নাম লিখিয়েছেন বিধায়ক
হুমায়ুন কবীর ও অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। বহরমপুরের প্রার্থী অপছন্দ হওয়ার কথা সরাসরি বলে
ফেললেন হুমায়ুন। বললেন, “বাইরে থেকে খেলোয়ার বা গায়ক প্রার্থী এনে অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে
হারানো যাবে না”। ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে
বহরমপুরের প্রার্থী মানতে নারাজ তৃণমুলেরই একাংশ। যে দল এত দিন বাংলার বাইরের বিজেপি
নেতাদের বহিরাগত বলে চিৎকার জুড়ে এসেছে তারাই আজ বিহার থেকে শত্রুঘ্ন সিনহা, কীর্তি
আজাদ এবং গুজরাট থেকে ইউসুফ পাঠানকে উড়িয়ে এনে বাংলার বুকে প্রার্থী করেছে। যা দেখে
বিরোধীদের মন্তব্য “তৃণমূলে কি বাঙালী কম পড়িয়াছে”।
এদিকে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর ছবি দফতরে লাগানোর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী
ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রশংসা করতে শোনা গেছে অর্জুনের মুখে।সূত্রের
খবর বিজেপি মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে দলের পুরোনো সৈনিককে ফিরে পাওয়ার।
মুখে না বললেও সেই রাস্তা খোলা রেখেছেন অর্জুন। এবিষয়ে অর্জুনের
মন্তব্য, “ভেবে দেখছি”।
ব্যারাকপুরের বিদায়ীসাংসদ অর্জুন সিং এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মঙ্গলবার বলেন,“দলে আমার প্রয়োজন
ফুরিয়েছে। তৃণমূলের কাছে আমি অপ্রয়োজনীয় না হলে আমাকে এমন করে ছুড়ে ফেলা হত না। মোদীজি
বলতেন,“সম্পর্ক কারো সঙ্গে খারাপ করা
উচিত নয়”।
রবিবার ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে পার্থ
ভৌমিকের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই দলের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ
বিজেপির টিকিটে জিতে আসা পরে তৃণমূলে যোগদানকারী সাংসদ অর্জুন। রবিবার সরাসরি তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে তার ক্ষোভ উগড়ে দেন। যদিও তিনি সেদিন বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
যেটা ভাল মনে করেছেন সেটাই করেছেন।তবে
সেদিন বিকেল থেকেই বিক্ষোভ শুরু করে অর্জুনের অনুগামীরা। এমনকি সোমবার থেকে সুর বদলে যায় অর্জুন সিংয়ের। দল বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। টিকিট দেবে না জানলে আমি
দলে যোগ দিতাম না। এহেন কথা বলতে শুরু
করেন তিনি। আর মঙ্গলবার সকালেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁর দফতর থেকে। যা যথেষ্ট
ইঙ্গিতপূর্ণ। অর্জুনের ছেলে বিজেপি বিধায়ক পবন সিং স্পষ্ট বলেছেন, “ যা বাবার সঙ্গে
হয়েছে তা অন্যায়। আমি বাবার সঙ্গে আছি”। ফলে বাবার সঙ্গে ছেলের এবার “বাগী” হওয়ার সম্ভাবনা
প্রবল।