“মাঝে মাঝে মনে হয় ইকো পার্কের (Eco Park) পুকুরটা না বেচে দেয়”। গার্ডেনরিচ
কাণ্ডের পর ফের প্রকাশ্যে আসা শাসক ও প্রমোটারের যোগসাজেশে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ প্রসঙ্গে
কটাক্ষের সুরে বললেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
মঙ্গলবার সকালে নিউটাউন (Newtown) ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমনে
আসেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। পোস্তা, মাঝেরহাট সেতু-বিভ্রাটের স্মৃতি উস্কে এবার গার্ডেনরিচে (Garden Reach Incident) মৃত্যুমিছিল প্রসঙ্গে
মুখ খোলেন প্রাক্তন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। প্রসঙ্গত রাজ্য রাজনীতিতে
আলোড়ন ফেলে দিয়েছে রবিবার মাঝরাতের ঘটনা। যেখানে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বেআইনি বহুতল(Multi Storied Building Collapse)। এই ঘটনায় ৯জনের মৃত্যু ও ১২জন আহত হয়েছেন।
দিলীপ ঘোষ এই ঘটনায় রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদেরও যুক্ত থাকার ইঙ্গিত দেন। তার অভিযোগ, “এই ঘটনায় নেতারাও জড়িত। সরকারি কর্মীরা যারা টাকা পয়সা নিয়ে বেআইনি নির্মাণকে অনুমোদন দিয়ে
দিচ্ছেন তারাও যুক্ত। পুলিশ প্রশাসন নেতা প্রোমোটার সকলে মিলে মিশে আছে। এখন কোন
বাধা ছাড়াই এসব হচ্ছে। মেয়র ওখানে দেখতে গেছেন। ওখানকার কাউন্সিলর বলছে আমি কিছু
জানি না। একটা কাউন্সিলর তার ওয়ার্ডে এত বড় বিল্ডিং হচ্ছে সে জানে না। দেখেও না
দেখার ভান করে আছেন। কারণ এর পেছনে টাকা পয়সা আছে। যত খাল বিল নালা আছে সব
বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমার মনে হয় ইকো পার্কের পুকুরটা না বুজিয়ে দেয়”।
গার্ডেনরিচে একের পর
এক পুকুর বুজিয়ে বেআইনি বহুতল হয়েছে বলে
অভিযোগ। খাস কলকাতাতে আগেওএই ধরণের অভিযোগ
এসেছে। কিছু দিন পর সব ঠান্ডা বস্তায় চলে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে ৪
ফুট রাস্তায় ৫ তলা বাড়ি! তাও আবার অভিযোগ করলে খুনের হুমকি দেওয়া
হচ্ছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। দিলীপ ঘোষ এপ্রসঙ্গে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেন, “আগেও এরকম হয়েছে। কারণ এর পিছনে অনেক বড় শক্তি
আছে। টাকা পয়সার ব্যাপার আছে না হলে ওরকম হয় কি করে। বস্তির মাঝে যেখানে জায়গা
পেয়েছে পিলার তুলে বাড়ি করে দিচ্ছে। কি
করে সম্ভব হয় এটা। এখন তো ওই বাড়িতে লোক ছিল না। যদি কমপ্লিট হয়ে যেত এবং
প্রচুর মানুষ বাস করা শুরু করত তাহলে কত বড় বিপর্যয় হত? উপর
নিচ মিলিয়ে কতজনের প্রাণ যেত? কত এই ধরনের বাড়ি তৈরি হয়ে
গেছে। আর অপেক্ষার প্রহর গুনছে কখন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। শুনে চিন্তা হয় কি চলছে
এখানে। এখন বলছে খোঁজখবর নিয়ে এই ধরনের
কাজ বন্ধ করতে। কিন্তু নির্বাচন চলে গেলে সব বন্ধ হয়ে যাবে। মুখ্যমন্ত্রী গিয়ে
ছবি তুলবেন মেয়র গিয়ে আশ্বাস দেবেন আর প্যানেলে গিয়ে ওদের লোকেরা বলবে মৃত্যু
দুর্ভাগ্যজনক। গরম গরম কথা বলবেন। ক্ষতিপূরণ দেবেন আর সব বন্ধ হয়ে যাবে।
মানুষগুলো কি বাঁচবে না?”
গার্ডেনরিচকাণ্ডে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার
নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী দিলেও কাউন্সিলরকে আড়াল করে দায়
এড়ানোর চেষ্টা করছেন কলকাতার মেয়র এমনটাই অভিযোগ বিজেপির।
দিলীপ ঘোষ এক কদম এগিয়ে পুরসভায় তৃণমূলের টিকিট দেওয়ার পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন। তার বলেন,“ওখানকার কাউন্সিলার আগে ডাকাতিকে
কেসে আগে জেল খেটেছে। এমন মহান লোকেদের তৃণমূল টিকিট দিয়ে কাউন্সিলর করেছে। এমন
ডাকাত লোক কি করে কাউন্সিলর হতে পারে? এদের গায়ে কে হাত
দেবে? শাহজাহানের ক্ষেত্রে আমরা
বলেছিলাম পাড়ায় পাড়ায় শাহজাহান তৈরি করেছেন দিদিমণি। এখন তার ফল ভোগ করতে
হচ্ছে সকলকে।”
প্রসঙ্গত ডিয়ার লটারির (Deer Lottery) মালিকের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। তার অপর সংস্থা ফিউচার গেমিং (Future Gaming) রয়েছে
তদন্তকারী সংস্থা ইডির (ED) তদন্তের আওতায়। স্ক্যানারে থাকা সংস্থার নির্বাচনী
বন্ডের একটা বড় অংশ নাকি গিয়েছে তৃণমূলের অ্যাকাউন্টে
এমনটাই অভিযোগ করেছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি এপ্রসঙ্গে বলেন, “ শুধু
ডিয়ার লটারি নয় যারা মেট্রো ডেয়ারি (Metro Dairy) কিনেছিল সেই কোম্পানি Kaventer ৬৭৩ কোটি টাকা তৃণমূল
কংগ্রেসকে দিয়েছে। কেভেন্টারের দেখুন
যত জায়গায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিটিং সেখানে তার মালিক জালান বসে আছেন। ৬৭৩
কোটি টাকা একাধিক বারে দিয়েছেন। এছাড়াও ডিয়ার লটারি ফিউচার গেমিং ইত্যাদি
কোম্পানিগুলি তৃণমূলকে (TMC) টাকা দিয়েইছে”।