মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় বনাম রাজ্যের মন্ত্রীর সংঘর্ষের ঘটনায় ৪৫ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করল তৃণমূল
কংগ্রেস। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ মন্তব্য
করেন, “ গতকালকের যে ঘটনা বিজেপি ঘটিয়েছে তা ন্যাক্কারজন।
শুধু রাজনৈতিক বা পুলিশকে আক্রান্ত করাই নয় সাধারন মানুষদের আক্রমণ করা হয়েছে।
এই ঘটনায় জড়িত প্রতিমন্ত্রী তথা বর্তমান বিজেপির কোচবিহার
কেন্দ্রের প্রার্থী নিশীথ প্রামানিক। সেই সঙ্গে রয়েছেন শহর মন্ডল সভাপতি অজয়
রায় সহ অন্যান্যরা”। নিশীথের সরাসরি
নির্দেশে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল
কোচবিহারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। শুধুমাত্র দলীয় কর্মীরা নন দিনহাটা মহকুমা
পুলিশ আধিকারিক ঘটনায় গুরুতর আক্রান্ত। সব মিলিয়ে পরিস্থিতির উত্তপ্ত। বুধবার
সকাল থেকে চব্বিশ ঘন্টার বন্ধ পালন করছে দিনহাটায়। ইতিমধ্যেই শুনশান দিনহাটা।
বলাবাহুল্য,এই ঘটনার পর
বুধবার সকাল থেকেই দিনহাটায় বন্ধ দোকানপাট। বৃষ্টি ভেজা সকালে থমথমে দিনহাটা শহর
সহ বিভিন্ন এলাকা। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ এর উপস্থিতি চোখে পড়েছে।
লোকসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক সংঘর্ষে ফের একবার শিরোনামে দিনহাটা। উল্লেখ্য গতকাল
মঙ্গলবার রাত ১০ টায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ এবং রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন
গুহর মুখোমুখি লড়াইকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিনহাটা। বিজেপির অভিযোগ ছিল
দিনহাটা শহরে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক এর কনভয়ের উপর হামলা
চালায় তৃণমূল কংগ্রেস, ছোড়া হয় পাথর গুলি বোমা। অন্যদিকে
তৃণমূলের অভিযোগ কনভয় থামিয়ে হামলা চালায় নিশীথের কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং বিজেপি
কর্মীরা। দুই পক্ষের হাতাহাতি লড়াইয়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়, আহত হন দুই পক্ষের বেশ কিছু কর্মী। জেলা বিজেপি সভাপতি আক্রান্ত হন,
তার চোখে আঘাত লাগে। আহত হন তৃণমূল কংগ্রেসের চারজন কর্মী। নিজেদের
কর্মীদের বাঁচাতে তেরে আসেন দুই মন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক উদয়ন গুহ। রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি
তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খায় পুলিশ, লাঠি
আঘাতে মাথা ফাটে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ধিমান মিত্রের। তড়িঘড়ি তাকে দিনহাটা
মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন জেলা
পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য।
উল্লেখ্য ঘটনার পরেই দিনহাটা মহাকুমা জুড়ে ২৪
ঘন্টা বন্ধ এর ডাক দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। অন্যদিকে জেলা
পুলিশ সুপার অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দেয় বিজেপি। টানটান উত্তেজনা এবং কড়া পুলিশি
প্রহরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তর।
পাল্টা নিশীথ বলেন, “ এই ঘটনা নিন্দনীয়। ধিক্কার জানাই। আমাদের
নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। আমরা ফিরে আসার সময় দেখি তৃণমূলের একটা কার্যক্রম চলছে। আমরা
পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁরা আক্রমণ করে। ওদের সঙ্গে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র ছিল। আমার
কনভয় এগিয়ে যাওয়ার পর পিছন থেকে হামলা করেছে ওরা। আমার গাড়িতেও হামলা হয়েছে। দিনহাটার
বিধায়ক বারংবার আক্রমণ করছেন। উদয়ন গুহ তার সঙ্গী সন্ত্রাসীদের উপর হামলা করে আমাদের
উপরেই কেস করেছেন। এটা গণতান্ত্রিক দেশে বেশি দিন চলতে পারে না”।