লোকসভা
নির্বাচনের নিঘন্ট প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। শাসক থেকে বিরোধী প্রায় সব পক্ষের
প্রার্থীরা জোরদার প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ ভাঙড় বিধানসভা। আর সেই ভাঙড়ের ভোট মেশিনারি আরাবুল ইসলাম
(Arabul Islam)। তিনি এবার ভোটের ময়দানে নেই। তিনি বর্তমানে
বারুইপুর জেলে কারাবন্দী। তার মুক্তির দাবিতে কোর্ট চত্বরে ধুলোয় গড়াগড়ি খেয়ে
বিক্ষোভ দেখানো থেকে সামাজিক মাধ্যমে আরাবুলের মুক্তির
দাবিতে সরব হয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। দলের একাংশের মতে এলাকায় আইএসএফ বিধায়ক
জয়ী হওয়ার শাস্তি পাচ্ছেন আরাবুল। দলেরই একাংশের মতে চক্রান্তের শিকার আরাবুল।
গত
বিধানসভা নির্বাচনে এই ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হন আইএসএফ (ISF)। সুতরাং একদা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি ভাঙড় (Bhangar)
পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে আইএসএফ
কর্মী খুনের ঘটনায় ৮ই ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা
প্রাপ্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলাম। জামিন পাওয়া তো দুর অস্ত তাঁকে
একের পর এক কেসে ট্যাগ করে কখনো পুলিশ হেফাজত তো আবার কখনো জেল হেফাজতে রাখা
হচ্ছে। এই আবহে ভোট ময়দানে নেই ভাঙড়ের তাজা নেতা তথা ভাঙড়ের ভোট মেশিনারি আরাবুল
ইসলাম। তার অনুগামী থেকে সাধারণ কর্মী সমর্থকেরা কার্যত মুষড়ে পড়েছেন। আরাবুল
ইসলামের মুক্তির দাবিতে ইতিমধ্যে ফেসবুক তথা স্যোসাল মিডিয়াতে সরব হয়েছেন বহু
তৃণমূল কর্মী থেকে আরাবুল অনুগামীরা। কেউ ফেসবুক পোষ্ট করে লিখছেন, “আরাবুল ইসলাম নির্দোষ তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হক।” আবার কেউ
ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করছেন, “আরাবুল ইসলাম কে মিথ্যা
কেসে জেলে ভরা হয়েছে।তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হক।” এক আরাবুল ঘনিষ্ঠ
তৃণমূল নেতা বলেন, “দাদা কে প্রথমে আইএসএফ কর্মী খুনের
ঘটনায় উত্তর কাশীপুর থানা গ্রেফতার করে তার পর জিরেনগাছার ঝামেলায় পোলেরহাট থানা
দাদাকে পুলিশ হেফাজত নেয়। এখন শুনছি ভাঙড়
থানার একটি পুরানো মামলায় দাদা কে জড়ানো হয়েছে।”তিনি আরও বলেন, “ভাঙড় ১ ব্লকের প্রাণগঞ্জ এলাকার তৃণমূল নেতা ফজলে করিমের বাড়িতে কবে কারা
বোমা মেরেছিল সেই কেসে এখন আরাবুল দাকে ট্যাগ করেছে। এ সব
চক্রান্ত চলছে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও এক আরাবুল ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মী
বলেন, “এ সব হচ্ছে চক্রান্ত, আরাবুল
দাকে রাজনৈতিক ময়দান থেকে সরিয়ে দিতে চক্রান্ত চলছে।”
সোশ্যাল
মিডিয়াতে প্রতিবাদের পাশাপাশি এবার একেবারে বারুইপুর কোর্ট চত্বরে আরাবুল ইসলামের
মুক্তির দাবিতে ভাঙড়ের বামনঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য দীলিপ
পাত্র ধুলোয় গড়াগড়ি খেয়ে বিক্ষোভ দেখান। তার দাবি, “দাদা
কে মিথ্যা কেসে ফাঁসানো হয়েছে। দাদার মুক্তির জন্য ঠাকুরের কাছে মানত করেছি।কোর্ট
চত্বরে ধুলোয় গড়াগড়ি খেয়েছি।” যদিও এ বিষয়ে ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা বলেন,
“এটা বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”
স্থানীয় সুত্রে জানা
গিয়েছে, ভাঙড় ২ ব্লকের ১০ টি অঞ্চলের মধ্যে বিস্তৃর্ণ
এলাকায় আরাবুল ইসলামের প্রভাব যথেষ্ট। তার এক ডাকে কয়েক হাজার তৃণমূল কর্মী
মিটিং-মিছিলে উপস্থিত হয়ে যেত। কিন্তু এই ভোটের ময়দানে নেই আরাবুল সুতরাং কর্মী
সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস-উৎসাহ উদ্দীপনা সেই আগের মতন আর নেই বলে মনে করছেন
নেতৃত্বরা। আরাবুলের অনুপস্থিতি যে একটা ফ্যাক্টার তা মানছেন ভাঙড়ের স্থানীয়
নেতৃত্ব।