অরুণাচল ইস্যুতে ভারতের পাশে দাঁড়াল মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র। অরুণাচল প্রদেশের উপর চিনের কাল্পনিক দাবিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিল আমেরিকা। সম্প্রতি চিন তাদের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে পূর্ব
ভারতের রাজ্য অরুণাচল প্রদেশকে তাদের দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে দাবি করে একটি
কাল্পনিক নাম জাংনান দিয়েছিল। চিননিজেই
পঞ্চাশের দশকে তিব্বতকে আক্রমণ করে দখল করে। আজও
তিব্বতে নরসংহার ও মানবাধিকার উল্লঙ্ঘন করার অভিযোগ ওঠে চিনা প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
চিন মাঝেমধ্যেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অংশকে নিজেদের বলে দাবি করে। এমন কোন
প্রতিবেশী নেই যার সঙ্গে চিনের কোন সীমানা সংক্রান্ত বিবাদ নেই। সেনা
অভিযানের মাধ্যমে অল্প অল্প করে প্রতিবেশীর এলাকা হাতিয়ে
নেওয়ার চেষ্টা করে কমিউনিস্ট পার্টির সেনা। চিনে মাও সরকার আসার পর থেকে ভারতের সঙ্গে সীমানা লাগোয়া প্রত্যেকটি অঞ্চলে অল্প অল্প করে দখল করার ইচ্ছে দেখা দেয় তাঁদের সেনার
মনে। এরমধ্যে ৬২টির যুদ্ধে বেশ কিছু জায়গা বিশেষ করে লাদাখের কিছু
অংশ দখল করতে সক্ষম হয় চিন। অরুণাচল প্রদেশের অনেকটা বড়
অংশ দখল করে। পরে অবশ্য ভারতকে দখল করা অংশ ফেরত দিয়ে দিয়েছিল লাল ফৌজ। এখন ভারতের গোটা
অরুণাচল প্রদেশ দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে নতুন করে দাবী করা শুরু করেছে চীনের
বিদেশ মন্ত্রক। পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের অভিন্ন অংশ বলে দাবি
করা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট
ডিপার্টমেন্টের তরফে। ওই দফতরের মুখ্য নির্বাহী
মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল বলেছেন,“অরুণাচল
প্রদেশ ভারতের অঙ্গ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিনের একতরফা
সীমানা বদল বদলের চেষ্টা কিংবা হঠাৎ হঠাৎ ভিন্ন দেশের কোন অংশকে নিজেদের বলে দাবি
করার ঘটনার তীব্র বিরোধিতা জানায়”।
প্রসঙ্গত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির
অরুণাচল সফর ও সেলা টানেল উদ্বোধনের পরেই চীনের সামরিক
মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাং গাওগাং তার ভুয়ো দিতে বলেন,“অরুণাচল প্রদেশ তাদের অংশ”। এক কাল্পনিক নাম
দিয়ে বসে ড্রাগন। পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়ে ভারত ভারতের বিদেশ
মন্ত্রকের মুখপাত্র রান্ধির জয়সওয়াল চীনের দাবিকে মনগড়া বলে জানান। এবং একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অভিন্ন অঙ্গ। ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শংকর আগেই জানিয়েছেন এই অঞ্চলে
শান্তি বজায় রাখার জন্য চিনের এই ধরণের আপত্তিকর এবং কাল্পনিক মন্তব্য থেকে বিরত থাকা
উচিত। প্রসঙ্গত সামরিক শক্তিতে ভারত এখন আগের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে। বিগত কয়েকবছরে
সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় ও ঘরোয়া ভাবে তৈরি করে ভারত সেনাকে যেভাবে শক্তিশালী করেছে তাতে
ভয় পেয়েই চিন মাঝে মধ্যে এহেন অলীক কল্পনার দাবি করে নিজের জনগণকে খুশি করার চেষ্টা
করে বলে মনে করছেন ভূরাজনীতি বিশেষজ্ঞরা।