বর্ধমান দুর্গাপুর। এই আসন থেকে বিদায়ী সাংসদ বিজেপির এস
এস আলুওয়ালিয়া। দুবারের জয়ী এই বর্ষীয়ান সাংসদ এবার টিকিট পাননি। এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী
হয়েছেন বিজেপির মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সোমবার নিজের কেন্দ্রে পৌঁছে প্রথম দিনেই
মাতিয়ে দিলেন দিলীপ ঘোষ।
দিলীপ ঘোষকে এক পলক দেখার জন্য সোমবার কর্মীরা আগ্রহী হয়ে
ছিল। তাঁকে বরণ করে নেওয়া হল এভাবে যেন তিনি সেলিব্রিটি। তৃণমূলের রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়,
জুন মালিয়া, সায়নী ঘোষ, ইউসুফ পাঠানরা কিংবা কীর্তি আজাদদের এভাবে স্বাগত জানায়নি তাঁদের
কর্মীরা। এটাই প্রমাণ করে দিলীপ ঘোষ কোন ধাতুর তৈরি।
কেন দিলীপ ঘোষের জন্য কর্মীরা উতলা হয়ে থাকে? দিলীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ
মহলের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ৬% ভোট পেত। ৬ থেকে ৩০ এর কোঠায় ভোটের কারিগর দিলীপ
ঘোষ। শূন্য থেকে ৩ বিধায়ক। সেখান থেকে ১৮ জন সাংসদ। সবশেষ ৭৭ জন বিধায়ক। সবই হয়েছে
দিলীপ ঘোষ সভাপতি থাকার সময়। কর্মীরা ভয়ে যেখানে গুটিয়ে থাকত সেখানে গরম গরম ভাষণ দিয়ে
বের করে ময়দানে নামানোর কারিগর দিলীপ ঘোষ। তাই কর্মীদের আবেগ আছে তার প্রতি।
বিধানসভা ভোটের পর রটে গেছিল আঁতাতের তত্ব। কিন্তু তিনি কর্মীদের পাশে থেকে নীরবে কাজ করে প্রমাণ করেছেন
নিজের কর্তব্য ঠিক ভাবে করে গেলে রাজনীতিতে গুজবের মোকাবিলা সহজে করা যায়। এখনও বিজেপির
যা কর্মীবল রয়েছে তার বেশিরভাগ তৈরি ১৪ থেকে ২১এ। সেই সেনা নিয়েই ২৪ এর ময়দানে নামছে বিজেপি। সেই আবেগেই ভর করে বর্ধমান দুর্গাপুরে ঝাঁপিয়ে পড়তে
ভয় পাননি ডাকাবুকো দিলীপ। তার প্রতিপক্ষ ক্রিকেটের
ময়দানে ৮৩’র বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য কীর্তি আজাদ। কিন্তু দিলীপ এর জবাব দিয়েছেন ভালই।
বলেছেন, “উনি তো রিটায়ার্ড। আমি ফর্মে আছি”। আত্মবিশ্বাস আর কাজের কাজ চুপি চুপি করে
যাওয়াই তার রহস্যের চাবিকাঠি।
নিজের মেদিনীপুর আসন থেকে তিনি লড়তে চান এই দাবি ছিল দিলীপের।
জেতা আসনে দল পার্থী করেছে অগ্নিমিত্রাকে। তার ভাগ্যে জুটেছে বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্র।
আহলুওয়ালিয়া এখান থেকে জয়ী হলেও বিরোধীদের অভিযোগ ছিল তাঁকে নাকি খুঁজেই পাওয়া যায়
না। কিন্তু তিনি দলের বাধ্য সৈনিকের মত কোনও গোঁসা বা ফোঁস না করে রাজী হয়েছেন বিজেপির
হয়ে ময়দানে নামার জন্য। কেন্দ্রে পৌঁছেই তাঁকে ঘিরে যে কর্মীদের আবেগ ধরা পড়ল তাতে
ক্রিকেটের ভাষায় সুইং কিংবা ঘুর্ণি পিচে সেট হয়ে গেছেন তা বলাই যায়।