স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে স্বাধীনতার চেতনায়
বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার ২৬ মার্চ জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের
বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর পরিদর্শন বইয়ে এ প্রতিজ্ঞার কথা লেখেন তিনি।
পরিদর্শন বইয়ে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আজ ২৬ মার্চ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। আজকের দিনে আমি
পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানকে। আমি শ্রদ্ধা জানাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম ও
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতিতা
মা-বোনদের প্রতি। গভীর বেদনাভরা ক্লান্ত হৃদয়ে স্মরণ করছি আমার মা বেগম ফজিলাতুন
নেছা এবং আমার তিন ছোট ভাই কামাল, জামাল, রাসেলসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের নির্মম বুলেটে আঘাতে যারা শাহাদাত
বরণ করেছেন তাদের।’এসময় তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতার
প্রতিও শ্রদ্ধা জানান; যাদের ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর
নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লেখেন ভুটানের রাজা জিগমে
খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকেও। প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘আজ এই মহান
দিবসে আমাদের প্রতিজ্ঞা— স্বাধীনতার চেতনায় বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা
গড়ে তুলবো, ইনশাল্লাহ।’দেশের সব জনসাধারণকে মহান স্বাধীনতা ও
জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছাও জানান শেখ হাসিনা। ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে
পরিদর্শন বইয়ের লেখা শেষ করেন তিনি।
মঙ্গলবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস।
খুবভোরে ঢাকার অদূরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের
বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী
ও ভুটানের রাজা। এরপর ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শেখ
হাসিনা।বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা
জানিয়ে কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা গার্ড অব
অনার প্রদান করেন। পরে আওয়ামি লিগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে দ্বিতীয়
বার বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। পরে বঙ্গবন্ধু ভবন
এলাকা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে আওয়ামি লিগ ও এর সহযোগী সংগঠনের
নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন
করেন।
সাভারে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা
জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি,
প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজা। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়।পরে আওয়ামি
লিগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের প্রধান শেখ হাসিনা স্মৃতিসৌধের
বেদিতে আরেকবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী
ও ভুটানের রাজা দর্শনার্থী বইয়ে সই করেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির
ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের
মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি অর্জন করে চূড়ান্ত বিজয়। রাষ্ট্রীয়
অনুষ্ঠানের বাইরেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও
সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করছে। ৫৪তম মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পৃথক
বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের
স্বীকৃতিস্বরূপ ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৪’ প্রদান করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী সোমবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশের
সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এই পুরস্কার প্রদান করেন। এবার স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে
তিনজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে একজন, চিকিৎসাবিদ্যায়
একজন পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়া সংস্কৃতিতে একজন, ক্রীড়াক্ষেত্রে
একজন ও সমাজসেবায় তিনজন এই পুরস্কার পেয়েছেন।স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে
পুরস্কার পেয়েছেন কাজী আবদুস সাত্তার বীর প্রতীক, বীর
মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট সার্জেন্ট মো. ফজলুল হক (মরণোত্তর) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ
আবু নঈম মো. নজিব উদ্দীন খান (খুররম) (মরণোত্তর)। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে পুরস্কার
পেয়েছেন ড. মোবারক আহমদ খান, চিকিৎসাবিদ্যায় ডা. হরিশংকর
দাশ। সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান ও ক্রীড়াক্ষেত্রে ফিরোজা খাতুন। সমাজসেবা/
জনসেবা ক্ষেত্রে পুরস্কার পেয়েছে পেয়েছেন অরণ্য চিরান, বীর
মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়েদুল্লাহ বাকী ও এস এম আব্রাহাম লিংকন।
পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট মানের ৫০ গ্রাম স্বর্ণের পদক, সম্মানীর অর্থের চেক ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদসচিব মো.
মাহবুব হোসেন পুরস্কার বিতরণী পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের
সাইটেশন পাঠ করেন।
দিলীপ ঘোষের বেলাগাম কুকথার জবাব দিলেন
কীর্তি আজাদ। সকালে দিলীপের ‘বাউন্সার‘ এর জবাবে দুপুরেই ছক্কা হাঁকালেন
বর্ধমান – দুর্গাপুরের তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ। দিলীপ ঘোষের মুখ্যমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কুকথার জবাবে এদিন কীর্তি আজাদ বলেন, ” দিলীপ ঘোষ ও বিজেপির মানসিকতা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। যে তাঁরা কীভাবে
নারী শক্তির অপমান করে। দিলীপ ঘোষ তো মা দুর্গাকেও অপমান করেছিলেন। বলেছিলেন
দুর্গার বাবা মা কে তা জানি না। দিদিকে নিয়েই একই কথা বলেছে। এইসব বিজেপির জমিদারি
মানসিকতা। নারী জাতিকে সম্মান করে না বিজেপি। যারা মাতৃ শক্তি, দুর্গা, শ্যামা, মহিলা এমনকি
দিদিকে অপমান করে তাঁদের কী করে সহ্য করে মানুষ? এদের ও এদের
এই ধরণের মানসিকতাকে বহিষ্কার করা উচিত। মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে এরা। হাসপাতালে
পাঠানো উচিত। এদের সমাজে বাস করার অধিকার নেই। ধিক্কার জানাই এদের।”