ভোট যত এগিয়ে আসছে ইন্ডিয়া জোটের ফাটোল ততই চওড়া হচ্ছে। নানা
মুনির নানা মত। আর তা নিয়ে জটের অন্দরে গোঁসা। এখন জোটের অন্দরে সসয়ার নাম দার্জিলিং। ইন্ডিয়াজোট ঘিরে কংগ্রেসের অন্দরে সংঘাত তুমূলে। দার্জিলিংয়ের হামরো
পার্টির প্রতিষ্ঠাতা অজয় এডওয়ার্ড ইন্ডিয়া জোটে সমর্থন জানিয়ে কংগ্রেসের হাত ধরতেই
পাহাড়ে বিদ্রোহী অবস্থানে কংগ্রেসের বিনয় তামাং। একেই বলে স্বার্থ সংঘাত।
মনীশ তামাংয়ের
কংগ্রেস যোগ এবং অজয় দেবের হামরো পার্টির ইন্ডিয়া জোটকে সমর্থনের খবর সামনে
আসতেই পাহাড়ে নিজ দল কংগ্রেসকে তুলোধনা করে দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিলেন বিনয় তামাঙ। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটি রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেস এবং
দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস কমিটির সঙ্গে কোন রকম আলোচনার না করেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে খোলা অভিযোগ বিনয়ের। তার দাবি কেন্দ্রীয় কংগ্রেস কমিটি জেলার
নেতৃত্বদের সঙ্গে কোন রকম আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তা মনে করেনি এমনকি রাজ্য প্রদেশ
কংগ্রেসকেও তারা গুরুত্ব দেয়নি।ফলে ফের পাহাড়ে রাজনৈতিক
আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে সংঘর্ষ তুমুল হতে চলেছে। রাজনীতির নামে দর কষাকষি করে ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করে আসা পাহাড়ের
আঞ্চলিক দলগুলি খয়িষ্ণু পরিস্থিতিতে অস্তিত্ব সংকট তৈরী হয়েছে। বিমলের গোর্খা
জনমুক্তি মোর্চার পরিস্থিতি প্রায় অবলুপ্তির পথগামী। একই
সঙ্গে অস্তাচলে পাহাড়ে অজয় এডওয়ার্ডের নেতৃত্বে হামরো পার্টি। বিনয় গোর্খা
জনমুক্তি মোর্চার থেকে বেরিয়ে এসে তৃণমূলের যোগ দেয়। পরবর্তীতে দল বিরোধী
কার্যকলাপে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয় বিনয় তামাঙকে। এরপরই কংগ্রেসের হাত ধরে
কোনোরকম রাজনৈতিক অবলম্বন নিয়ে পাহাড়ে টিকে থাকার লড়াইতে নামে বিনয়। কংগ্রেসের
যোগদানের সময় থেকে রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে লোকসভা নির্বাচনে বিনয়কে টিকিট
প্রদানের আশ্বাস দিয়ে দলে টানা হয়। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে তোরজোড় শুরু হলেও দার্জিলিং
লোকসভা আসনে ইন্ডিয়া জোটে কংগ্রেস সিপিএম মীমাংসায় পৌঁছতে
পারেনি দীর্ঘ আলোচনায়। সিপিএম গা ছাড়া দিয়ে দার্জিলিং লোকসভা আসনে যেহেতু
কংগ্রেস প্রার্থী দেবে তাই রাজনৈতিক ময়দান থেকে সম্পূর্ণ বিরতি নিয়েছে। এই
পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিল পর্ব শুরু হলেও কংগ্রেস সিপিএমের কোনো পরিষ্কার বক্তব্য পেশ করতে পারেনি। এরই মাঝে
দিল্লিতে অজয় এডওয়ার্ড জেলা ও অধীর রঞ্জন চৌধুরীর রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেসকে
সম্পূর্ণ আড়ালে রেখেই ইন্ডিয়া জোটে নাম লেখায়। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটি রাজ্যে
কংগ্রেসের বেতাজ বাদশা বলা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর সঙ্গে এই বিষয়ে কোনো রকম কথোপকথনে
যায়নি বলেই জানা গিয়েছে। আর এতে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সংঘাত সরাসরি
প্রকাশ্যে উঠে এসেছে দলের রাজ্য ও জেলার। এদিন দিল্লিতে অজয় এডওয়ার্ড এবং মনীশ তামাঙ সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের হাত শক্ত করতেই পাহাড়ে বিনয় তামা ঘোষণা
করেন তিনি কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছেন।
বিনয় তামা কংগ্রেস ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। নির্বাচনে মনীষ তামাং এবং অজয়
এডওয়ার্ডকে সমর্থন করতে পারবেন না তিনি। বেশ কয়েকদিন আগেই বিনয় সামাজিক মাধ্যমে
ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে জানিয়েছিল এই সময়তে কংগ্রেসের পাহাড়ে মাটি পুনরুদ্ধারের
সম্ভাবনা ছিল তবে প্রার্থী ঘোষনা না করায় সে আশার তিমিরেই অবসান ঘটছে। এরপরই দলের
বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সরাসরি সংঘাতের পথে হাঁটলেন বিনয় তামাঙ। রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন
প্রায় ভ্যানিশ কংগ্রেসের হাতে গোনা নেতা কর্মীতেও এমন প্রকাশ্যে
তুমুল সংঘাত। দলটাই উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রসঙ্গত অজয় এডোয়ার্ড এক বিখ্যাত
বেসরকারী বেকারি সংস্থার মালিক।