মালদহে (Malda) গঙ্গার ভাঙন একটা বড় সমস্যা। মুখে প্রশাসনের
অনেক কথা থাকলেও আসলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিজ্ঞানসম্মতভাবে
ভাঙ্গন রোধ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থার আশ্বাস দিলেন বিজেপি প্রার্থী। দক্ষিণ মালদার বিজেপি প্রার্থী
শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী চায় পে চর্চা
করলেন মথুরাপুরে(Mathurapur)। পাশাপাশি হিরানন্দপুর গদাইচড় এলাকায় জনসংযোগ কর্মসূচি
সম্পন্ন করেন। এই প্রচার থেকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন,’ এবারের নির্বাচনের আমার প্রধান ইস্যু গঙ্গা(Ganga)
ভাঙন (River Erosion) রোধ। দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের
বেশিরভাগ এলাকায় ভাঙ্গন কবলিত। মানুষের
আশীর্বাদ পেলে সংসদে আমার প্রথম বক্তব্য থাকবে ভাঙ্গন রোধের বিষয়ে।
বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ভাঙন রোধ করা হবে ও জমি হারাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা
হবে।‘ গোদাইচর এলাকায় এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। এই
বিষয়ে জেলাশাসককে দায়ী করেন দক্ষিণ মালদার বিজেপি প্রার্থী (BJP
Candidate) রুপা মিত্র চৌধুরী। তিনি বলেন,“কেন্দ্রীয় সরকারের সৌভাগ্য যোজনার মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামে ইলেকট্রিক
পৌঁছেছে। কিন্তু প্রশাসন সঠিকভাবে কাজ না করাই গোদাইচর এলাকার মানুষ বিদ্যুৎ থেকে
বঞ্চিত রয়েছে”।
তৃণমূলের প্রার্থী শাহনাওয়াজ আলী রাইহান
নির্ভয়া দিদিকে নিরুদ্দেশ দিদি বলে কটাক্ষ করেছিলেন। সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের
উত্তরে নির্ভয়া দিদি বলেন,’ বিরোধীরা যা বলছে বলুক।
নির্ভয়া দিদি সেবা সুশাসন ও জনকল্যাণমূলক কাজ করছে ভবিষ্যতে ও করবে। গত লোকসভা
নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে নির্ভয়া দিদি পরাজিত হয়েছিলেন। সাংবাদিকের প্রশ্নের
উত্তরে নির্ভয়া দিদি জানান,’ গত লোকসভায় আমরা সামান্য
মার্জিনে পরাজিত হয়েছিলাম। এই পরাজয় নির্ভয়া দিদির নয়। মালদার ৫০ লক্ষ মানুষের
পরাজয়। নির্ভয়া দিদি যদি জিতত তাহলে এলাকায় অনেক কাজ হতো। কিন্তু সম্মানীয়
বয়স্ক সাংসদ এলাকার জন্য কিছুই কাজ করেননি।‘
প্রসঙ্গত দিন কয়েক আগেই গঙ্গা ভাঙ্গন রোধ করার
জন্য মালদহের মানুষ সকল প্রার্থীকেই খোলা চিঠি
লিখেছিলেন। খোলা চিঠিতে সবার আগে সাড়া দিলেন বিজেপি
প্রার্থী। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মধ্যে একটু হলেও আশ্বাস
জেগেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বিগত ছয় বছর ধরে টানা গঙ্গা ভাঙনের
জেরে মালদহের মানিকচক, রতুয়া ও কালিয়াচক-৩ এলাকার মানুষভিটে মাটি হারিয়ে সর্বশান্ত।
প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের বাড়িঘর এবং জমি গঙ্গাবক্ষে বিলীন
হয়েছে। অথচ তাদের কোনরকম পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি
প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমনটাই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এই
প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন,“যেটুকু পেরেছে রাজ্য সরকার কাজ করেছে। গত দু বছর ধরে
কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক প্রকল্পের টাকা বন্ধ রয়েছে। তবে
রাজ্যের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা কেন্দ্রের তহবিল থেকে হবে কেন?
প্রশ্ন বাসিন্দাদের। তাদের বক্তব্য রাজ্যের আয় থেকে দান
খয়রাতির বদলে সর্বশান্ত জনগণের জন্য কাজ করা কি যায় না? সরকার সব
কিছুর জন্য কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী থাকতে হবে? কেন কোন
দাবি-দাওয়া তুলে ধরলে কেন্দ্রের তহবিল বন্ধের কান্না গান গাওয়া হবে। নদী ভাঙনের সমস্যা ফারাক্কা ব্যারেজ তৈরি হওয়ার পর
থেকেই শুরু হয়েছে। দিন দিন আরও ব্যাপক আকার ধারণ করছে
গঙ্গার ভাঙন। বিশেষ করে বর্ষার সময় যখন ফারাক্কা ব্যারেজ
থেকে জল ছাড়া হয় তখন বহু জায়গায় নতুন করে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা ভাঙ্গন রোধের জন্য বহুবার আন্দোলন করেছেন। কিন্তু তাদের লাভের লাভ কিছুই হয়নি। ভোট এলে তৃণমূলের
নেতারা ভোটের জন্য ভাঙন রোধের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু ভোট চলে গেলে এসির ঠান্ডা হাওয়ায় সব ভুলে যায় নেতারা অভিযোগ
বাসিন্দাদের।