শনিবার ৩০ মার্চ
মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) সদর (Sadar Cantt) এলাকার ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ স্টেশনের আওতাধীন মুহাল
(Muhaal) এলাকায় সাগর নামে এক টোটো রিকশা চালককে (E-
Rikshaw) ব্যাপক মারধর করল বিশেষ সম্প্রদায়ের উন্মত্ত জনতা। সাগরের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই
ওইদিন রঙ্গ পঞ্চমী (Local Festival)উপলক্ষে হোলির
গান বাজিয়েছিল। যারা মারধর করে তাদের বক্তব্য কেন তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ
এলাকায় তাদের ধর্মীয় আবেগের সঙ্গে যায় না এই ধরনের গান বাজানো হল।
পুলিশ সূত্রে খবর এই ঘটনায় ১৫ জনকে আটক করা
হয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতা (BJP) ও হিন্দু সংগঠনগুলি(Hindu
Organisation) পুলিশের কাছে
এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় কঠিন শাস্তি আবেদন করেছে।
জানা গেছে শনিবার ৩০ শে মার্চের রাত ১১ টা নাগাদ ওই রিকশাচালক এবং তার কিছু বন্ধুরা
হোলি সংক্রান্ত ধর্মীয় গান বাজাচ্ছিল। সেই সময় একদল উন্মত্ত জনতা এসে তাদেরকে ওই গান বন্ধ করতে বলে। তাঁরা হুমকি দেয় যেহেতু রমজান মাস চলছে তাই ওই এলাকায় এই ধরনের গান বাজানো যাবে না।পরিস্থিতি বেগতিক দিকে যাওয়ায় স্থানীয় কিছু মানুষ
ওই উন্মত্ত জনতাকেও ঠেকানোর চেষ্টা করে। এরপর উন্মত্তরা লাঠি
সোটা নিয়ে হামলা চালায় ওই টোটো চালক ও তার বন্ধুদের উপরে।
এমনকি ধারালো অস্ত্র প্রয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। দু
পক্ষের মধ্যে পাথর ছোড়াছড়ি হয় বলে জানা গেছে। বেশ কয়েকটি
গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আশেপাশের ছাদ থেকেও পাথর ছোড়া(Stone
Pelting) হয় বলে অভিযোগ।
এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। মারমুখী
জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ব্যাপক লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের সেল
ফাটানো হয়। পুলিশের বজ্র যান এই ধরনের
গন্ডগোল আটকাতে ব্যবহার করা হয় তা ওই ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।
আশপাশের চারটি থানা থেকে পুলিশ এনে ঘটনারস্থলে মোতায়ন করা
হয়। পুলিশ জানিয়েছে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে
দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।
স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক প্রদীপ লারিয়া বলেছেন,“এটি খুব চিন্তাজনক ঘটনা।
আমার মনে হয় এটা পূর্ব নির্ধারিত এবং পরিকল্পনামাফিক হামলা
করা হয়েছে।যে কেউ নিজের ধর্মকে
ভালবাসতেই পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় অন্য ধর্মের উপর তা
চাপিয়ে দিতে হবে এবং না মানলে আক্রমণ করতে হবে। আইন ভাঙ্গতে হবে। ভারতবর্ষের প্রত্যেকের নিজস্ব
ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করার অধিকার রয়েছে। এক ধর্মের মানুষ
অন্য ধর্মের উপরে নিজেদের আবদার চাপিয়ে দিতে পারে না। যেভাবে
আশপাশের বাড়ি থেকে পাথর ছোড়া হয়েছে এবং বোতল ছাড়া হয়েছে তাতে এই ধরনের ঘটনা যে পরিকল্পনা মাফিক করা হয়েছে তা যে কেউ বুঝতে পারবে। ৩০০ জন মানুষ একসঙ্গে জড়ো হয়ে গেল
হঠাৎ করে এটা অবিশ্বাস্য। পুলিশকে বলব কঠিন ব্যবস্থা নিতে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে প্রত্যেককে গ্রেফতার করে
আইনের আওতায় আনা হোক”। প্রসঙ্গত ওই বিজেপি বিধায়ক আশপাশের
এলাকায় যারা জবর দখলকারী তাদের দিকেও অভিযোগের আঙ্গুল
তুলেছেন। তার অভিযোগ আশপাশের বেশ কিছু মানুষ সরকারি
সম্পত্তির উপর জবরদখল করে আছে। এলাকায় হঠাৎ করে জবরদখল
বেড়ে গেছে। তারাও এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলে অনুমান
বিধায়কের।