রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ
কেশব বলিরাম হেডগেওয়াড় জন্মদিনে সোমবার শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সারা
দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। শুভেচ্ছা এসেছে
বিশ্বের নানান প্রান্ত থেকে। কিন্তু ডাক্তারজী
নামে পরিচিত কেশব বলিরাম হেডগেওয়ারের সম্পর্কে
এখনো চর্চা অনেকটা কম এই বাংলায়।
কে ছিলেন ডাক্তার কেশব বলিরাম হেডগেওয়াড়?
পরাধীন ভারতবর্ষে কেশব বলিরাম হেডগেওয়াড় ছিলেন
এক আদর্শ নায়ক। যিনি বুঝেছিলেন স্বাধীনতার পরেও
স্বাধীনতা ধরে রাখার জন্য একটি সংগঠনের প্রয়োজন। এর জন্যই
তিনি বিজয়া দশমীর সকালে তৈরি করেছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। আজকের দিনেই ১৮৮৯ সালে ১ এপ্রিল নাগপুরে কেশব বলিরাম
হেডগেওয়ারের জন্ম হয়েছিল।
কী ছিল তার সঙ্গে বঙ্গের যোগাযোগ?
জীবনে ডাক্তারি পড়তে কলকাতায় এসেছিলেন হেডগেওয়াড়।সশস্ত্র বিপ্লবী ও স্বাধীনতা সংরামীদেরসানিধ্যে এসেছিলেন তিনি। তার ভাবনার খোরাক পেয়েছিলেন এই কলকাতায়। অনুভব
করেছিলেন হিন্দুদের হিন্দু হিসেবে একত্রিত হতে হবে। না হলে
স্বাধীনতার পরেও পরাধীনতার সময় যে ভাবে দাঙ্গায় হিন্দুরা একতরফা মার খেয়েছে পরবর্তীকালেও
হালাল হয়ে যেতে হবে। তার আদর্শ অনুপ্রাণিত হয়েই ভারতীয় জনতা
পার্টি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল, হিন্দু সংহতি, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের মত বিবিধ
সংগঠন তৈরি হয়েছে। কংগ্রেসসহ অন্যান্য দল
আরএসএসকে নিত্যদিন বিঁধলেও বর্ষীয়ান
কংগ্রেস নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায় ২০১৮ সালে তাঁর মূর্তিতে
মাল্যদান করে বলেছিলেন, ভারত মায়ের এক মহান সন্তান বলিরাম”।
সংঘের কাছে এই দিনের গুরুত্ব!
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের কাছে এই দিনটি
গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ সংঘের প্রতিষ্ঠাতারপ্রথম সরসংঘ চালক ডাক্তার কেশব বলিরাম হেগড়েবার এই দিনেই
বৈদিক ব্রাহ্মণ পরিবারে নাগপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতার নাম ছিল বলিরাম পন্ত হেডগেওয়ার এবং মাতার নাম ছিল রেবতি বাই। তারা ছিলেন তিন ভাই ও তিন বোন। বড় ভাই মহাদেব,মেঝ ভাই সীতারাম এবং সর্বকনিষ্ঠ কেশব। মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি প্লেগ
মহামারীতে পিতা ও মাতাকে হারান। তিনি তার দাদা মহাদেব ও সীতারামের কাছে লালিত
পালিত হন। ভিক্টোরিয়ার রানী হওয়ার ৬০
বছর পূর্তি উপলক্ষে সারা দেশজুড়ে ধুমধাম করে উৎসব পালিত হচ্ছিল। বিভিন্ন
পাঠশালায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়। সেই সময় আট বছর বয়সী
ছাত্র কেশব বলিরামকে লাড্ডু খেতে দেওয়া
হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা নর্দমায় ছুঁড়ে
ফেলে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন এভাবে মিষ্টি বিলিয়ে ইংরেজরা
আমাদের স্থায়ী গোলামে পরিণত করে রাখতে চায়।
দেশে সংঘের গুরুত্ব?
দীর্ঘ ৮০০ বছরের দাসত্বের ফলে সনাতন ধর্মের
মানুষদের তার নিজস্ব গৌরবম সংস্কৃতি, পরম্পরা ও
ইতিহাস ভুলতে বসেছিল। বিদেশীদের প্রভুত্ব স্বীকার ও আন্তরিক বর্ণবাদের ফলে নিজ দেশে হিন্দুরা কোনঠাসা
হয়ে পড়েছিল। সেই জাতিকে একত্রিত করার মহান কাজ নিজের কাজে
তুলে নিয়েছিলেন ডক্টর কেশব বলিরাম হেডগেওয়াড়। যখন
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের জন্ম হয়েছিল তখন কেউই ভাবেনি এই সংগঠনের কয়েক কোটি
সদস্য হয়ে উঠবে। এই সংগঠনের মন্ত্রের দীক্ষিতরা পরবর্তীকালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে
সমাজের সর্বোচ্চ আসনে বসবেন।