নিউজ ডেস্ক: ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election) দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি (BJP) । সেবার ভারতের একটি কেন্দ্রে পঞ্চাশ হাজারের বেশি ভোট পড়েছিল নোটায় (NOTA)। বিহারের গোপালগঞ্জ (Gopalganj) আসনে (S.C Seat) সেবার ৫১,৬০৭ টি ভোট পড়েছিল নোটায়। যা ওই লোকসভা কেন্দ্রের মোট ভোটের ২.৮%। এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন জনতা দল ইউনাইটেডের (JDU) ডঃ অলক কুমার সুমন। যিনি পেয়েছিলেন ৫,৬৮,১৫০ ভোট।
অন্যদিকে দ্বিতীয় হয়েছিলেন লালু যাদবের দল আরজেডির (RJD) সুরেন্দ্রর রাম। তিনি পেয়েছিলেন ২,৮১,৭১৬ ভোট। তবে সবচেয়ে কম নোটায় ভোট পড়েছিল লাক্ষাদ্বীপ (Lakshadweep) কেন্দ্রে।
ইভিএম (EVM) মেশিনের যেই বোতামটি নিয়ে এত আলোচনা সেটি প্রথম কবে প্রয়োগ করা হয়েছিল জানেন? ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের নির্বাচন কমিশন তাদের ক্ষমতাবলে ইভিএম মেশিনে নোটার প্রয়োগ বলবত করেছিল। তার আগে দেশের সর্বোচ্চ আদালত একটি মামলায় আদেশ দিয়েছিল যাতে None of The above নামে একটি বোতাম ইভিএমে ব্যবহার করা যায়।
সর্বপ্রথম ২০১৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচটি রাজ্যে ইভিএম মেশিনে নোটায় ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল নির্বাচকদের। ছত্রিশগড়, মিজোরাম, রাজস্থান, দিল্লি ও মধ্যপ্রদেশের নির্বাচনে নোটায় ভোট দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল ভারতীয়দের। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নোটা প্রয়োগ করা হয়েছিল। তবে এর আগেও প্রার্থী পছন্দ না হলে নোটার সুযোগ ছিল। কিন্তু বিষয়টি তুলনামূলকভাবে জটিল ছিল। ভোটারদের কোন প্রার্থী পছন্দ নয় এটি জানানোর জন্য ফর্ম ৪৯ ভরতে হত। তবে এর জেরে নির্বাচকদের ভোটাধিকারের গোপনীয়তা ভঙ্গ হত বলে অভিযোগ উঠেছিল। যার জেরে ইভিএম মেশিনে ফর্ম ভরার জটিলতা তুলে দিয়ে সরাসরি নোটার ব্যবস্থা করা হয়।
ধরুন আপনার কোন প্রার্থী (candidate) পছন্দ নয়। তবু ভোট (vote) দিতে চান। সেক্ষেত্রে নোটায় (nota) ভোট দিয়ে আপনি আপনার গণতান্ত্রিক দায়িত্ব কর্তব্য পালন করলেন। তবে ভারতবর্ষে নোটায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়লেও তাতে কিছু এসে যাবে না। প্রার্থী হিসেবে যিনি সর্বোচ্চ ভোট পেলেন তিনিই জয়ী বলে বিবেচিত হবেন। ওই কেন্দ্রের নতুন নির্বাচন হবে এই সুযোগ এখনও নেই। তবে এই তথ্য সংগ্রহ করে রাখে নির্বাচন কমিশন।
কিছু কিছু দেশে সেই সুযোগ রয়েছে। সেই সকল দেশের লোটা সংখ্যাগরিষ্ঠ তা ভোট হলে ফের সকল প্রার্থী বদল করে পুনঃনির্বাচন করা হয়।
এবারের লোকসভা নির্বাচন ১৯জুন থেকে ১ জুন অবধি অনুষ্ঠিত হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের ভোটারদের আকর্ষিত করার জন্য যথাসাধ্য পরিশ্রম করছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে কাকে ভোট দেবেন তা মনস্থির করেই যান। তবে যাদের কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ নয় তাদের জন্যই নোটার ব্যবস্থা।
সারা ভারতবর্ষে নোটা নির্বাচকদের মনে প্রভাব ফেলেছিল।
এখনও প্রতিটি নির্বাচনে নোটায় ভোট পড়ে। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের তুলনায় নোটায় বেশি ভোট পড়েছে বলে দেখা গেছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত কোনও প্রার্থীর পছন্দ নাহলে তা গণতন্ত্রের জন্য সুস্থ ইঙ্গিত নয়। তবে প্রার্থী পছন্দ না হলে ভোটারদের তা জানানোর অধিকারের প্রয়োজন রয়েছে।