নিউজ ডেস্ক: ভর দুপুরেই অন্ধকার নেমে আসবে চারিদিকে। কারন ৫০ বছর পর বছরের প্রথম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ(Total Solar Eclipse) হতে চলেছে। গ্রহণের সময় চাঁদ ঢেকে ফেলবে সূর্যকে। দিনের আলো খুব কম পৌঁছবে পৃথিবীতে। এপ্রিলের শুরুতে বছরের প্রথম এই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ(Total Solar Eclipse) হতে চলেছে। মনে করা হচ্ছে বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ ৭.৫মিনিট স্থায়ী হবে। পৃথিবীর(earth) পশ্চিম গোলার্ধের বেশ কিছু এলাকা থেকে গ্রহণ স্পষ্ট দেখা যাবে।
জানা গেছে আগামী ৮ এপ্রিল, দুপুরে এই সূর্যগ্রহণ শুরু হবে৷ তবে ভারত থেকে এই বিরল দৃশ্য দেখার কোনও আশা নেই। মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয়(pacific ocean) উপকূল থেকে স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৭ মিনিট নাগাদ সর্বপ্রথম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। চাঁদের ছায়া উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যাওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র টেক্সাসে দুপুর ১:২৭ মিনিটে পূর্ণগ্রাস দেখা যাবে।
বিড়লা তারামণ্ডল(birla planetarium) জানাচ্ছে, ভরদুপুরেই আকাশে ফুটে উঠবে শুক্রগ্রহ ও বৃহস্পতি। পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার সময়ে চাঁদ যখন পৃথিবী আর সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখনই সূর্যগ্রহণ হয়। আর চাঁদের ছায়া যেখানে যেখানে পড়ে, সেখান থেকেই দেখা যায় গ্রহণ।
কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে-
এটিই হবে দীর্ঘতম সূর্যগ্রহণ । এই গ্রহণ প্রাণী এবং মানুষের স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে । এই নিয়ে গবেষণা করবেন নাসার(NASA) বিজ্ঞানীরা । বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিষীরাও এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করেছেন ।
জ্যোতিষশাস্ত্রে প্রত্যেকটি গ্রহণের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তা সূর্যগ্রহণ হোক কিংবা চন্দ্রগ্রহণ। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গেলে, সূর্যগ্রহণকে অশুভ বলেই মনে করা হয়। অন্যদিকে আবার বিজ্ঞানীদের মতে, সূর্যগ্রহণের(Solar Eclipse) গুরুত্ব অনেক। কারণ এই গ্রহণের সময় তারা অনেক তথ্য পান।
তবে গ্রহণ নিয়ে অনেক কুসংস্কার আছে বাঙালিদের মধ্যে। যেমন গ্রহনের সময় খাবার খাওয়া বা রান্না না করার রীতি রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যেহেতু সূর্যদেব গ্রাস হওয়ার ফলে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে তাই সেই সময় খেতে নেই। আবার এই গ্রহনের নেতিবাচক প্রভাব কাটাতে উপায়ও রয়েছে। গ্রহণের হওয়ার আগে খাবার এবং জলে তুলসী পাতা দিলে গ্রহণের নেতিবাচক প্রভাব দূর হয় বলেও কুসংস্কার কথিত আছে।
তবে বৈজ্ঞানিকদের(scientist) ব্যাখ্যা অনুযায়ী খাবার না খাওয়ার প্রথাটির আসল বৈজ্ঞানিক কারন হল সূর্য গ্রহণের সময় অন্ধকার নেমে এলে বাতাসে প্রচুর জীবাণু বেড়ে যায় তাই অই সময় খলা খাবারে ধুলো ময়লার সাথে জীবাণুও জমার আশঙ্কায় গ্রহনের সময় না খাওয়ার প্রথা রয়েছে।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও পূর্ণগ্রাস গ্রহণ দেখা যাবে পশ্চিম ইউরোপ প্যাসিফিক, আটলান্টিক, আর্কটিক মেক্সিকো, উত্তর আমেরিকা কানাডা, মধ্য আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরাঞ্চল, ইংল্যান্ডের উত্তর পশ্চিম অঞ্চল এবং আয়ারল্যান্ডে।
ইতিমধ্যেই এই গ্রহণকে কেন্দ্র করে কানাডায় জারি হল জরুরি অবস্থা। কানাডার অন্টারিয়োর নায়াগ্রা প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে প্রশাসন। কারন কানাডায়(canada) নায়াগ্রা জলপ্রপাতের(nayagra water falls) সামনে থেকে সূর্যগ্রহণ অত্যন্ত স্পষ্ট দেখা যায়। নায়াগ্রার প্রশাসন জানিয়েছে, সূর্যগ্রহণ দেখতে জলপ্রপাতের সামনে ১০ লক্ষের বেশি মানুষ জড়ো হতে পারেন। তাই ভিড় সামলাতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য,মেক্সিকোয়(mexico) সূর্যগ্রহণ চলার সময় ভারতে রাত থাকবে৷ তবে চাইলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গ্রহণ দেখা যেতেই পারে। আর যারা ওই দেশ থেকে সরাসরি গ্রহণ দেখবে তারা এক্স-রে প্লেট বা সানগ্লাস ব্যবহার করেই দেখবেন। নাহলে চোখের উপর খারাপ প্রভাব পড়বে।