ঘুরে দাঁড়ানো দূরের কথা, উঠে দাঁড়ানোই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে বামেদের। তাদের
রক্তক্ষরণ অব্যাহত। ভোট ব্যাংক ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে
দাঁড়াচ্ছে লাল পতাকাধারীদের। একদিকে জোট নিয়ে জটিলতা
অন্যদিকে কর্মীরা দল ছেড়ে অন্য দলে যোগ দিচ্ছেন। এবার
এসএফআইয়ের (SFI) প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা সিপিআইএমের
(CPIM) জেলা কমিটির সদস্য সুরজিৎ সরকার দলবল সহ যোগ দিলেন বিজেপিতে।
অন্যদিকে তৃণমূল ছেড়ে বেশ কয়েকজন এদিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বালুরঘাটের (Balurghat) বিজেপি (BJP) জেলা কার্যালয়ে এই যোগদান পর্ব
আয়োজিত হয়।
দল ছাড়ার পর সিপিএমের তরফে
দাবি করা হয় সুরজিৎ সরকারকে বহিষ্কার করা
হয়েছে। কেউ দল ছেড়ে অন্য দলে গেলে শৃংখলাভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কারের রেওয়াজ
রয়েছে সিপিএমে। দলের তরফে যোগদানকারীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন
বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী। ছিলেন জেলার সাধারণ
সম্পাদক বাপি সরকার সহ অন্যান্য বিজেপি নেতারাও। প্রসঙ্গত এই
লোকসভা আসন বালুরঘাট থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন দলের রাজ্য
সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনিই এলাকার
বর্তমান সাংসদ। যোগদানকারীদের দাবি সুকান্ত মজুমদার যেভাবে
বালুরঘাট জুড়ে উন্নয়ন করেছেন তা দেখেই আকৃষ্ট হয়েছেন সুরজিৎ সরকার।
সুরজিৎ
যোগদান পর্ব শেষে বলেন, “সুকান্ত বাবু যেভাবে বিরোধী দলে থেকেও নিজের
এলাকার উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছেন। উন্নয়নের ক্ষেত্রে
রাজনীতির রং দেখেননি। রাজ্যের শাসকের শত বাধা সত্বেও একের পর
এক উন্নয়নমূলক কাজ করে তিনি অন্যদের কাছে উদাহরণ তুলে ধরেছেন। সবেচেয়ে বড় ব্যাপার
তিনি সেরা সাংসদের পুরষ্কার পেয়েছেন।” প্রসঙ্গত এদিনের যোগদানের ফলে
এলাকায় বিজেপির সংগঠন মজবুত হল। অন্যদিকে আঞ্চলিক স্তরে
তৃণমূল ও সিপিএমের সংগঠন অনেকটাই ধাক্কা খেল।
প্রসঙ্গত লোকসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়তে
দলে দলে বিভিন্ন সংগঠন থেকে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক
শুরু হয়েছে। মার্চ মাসেই বিজেপির জেলা কার্যালয়ে মতুয়া
মহাসংঘ ও নমঃশূদ্র উদ্বাস্তু
সম্প্রদায়ের উত্তরবঙ্গের জেলা নেতৃত্ব বিজেপিতে দলবল সহ যোগদান করেছিলেন।
অন্যদিকে তৃণমূলের প্রার্থী বিপ্লব মিত্র দলের অন্দরে যে
কোণঠাসা তা আঞ্চলিক রাজনীতিতে কান পাতলেই শোনা যায়। ২০১৪
সালের লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট থেকে জয়ী হয়েছিলেন অর্পিতা ঘোষ। তারপর থেকেই এই জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল বাড়তে থাকে। নিজের হাতে সংগঠন তৈরি করার পরেও দলের মধ্যে কোণঠাসা ছিলেন বিপ্লব। ২০১৬
সালে বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণ দিনাজপুর হেরে যান তিনি।
সংগঠন না থাকলেও তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে ২০১৯ সালে
প্রথমবারের মত জেতে বিজেপি। ফলে বাংলার
রাজনীতিতে সুকান্ত মজুমদারের আবির্ভাব ঘটে। সুকান্ত মজুমদার
এই মুহূর্তে বাংলার রাজনীতিতে এক হেভিওয়েট প্রার্থী। দলবদল
করে ফের বিপ্লব মিত্র তৃণমূলে যাওয়ার পুরস্কার হিসেবে দলের টিকিট পেয়েছেন। কিন্তু সুকান্ত মজুমদারকে তিনি হারাতে কতটা সক্ষম হবে তা নিয়ে সংশয়ে রাজনৈতিক মহল।