নিউজ ডেস্ক: লোকসভার প্রথম দফায় নির্বাচন শুক্রবার। রাজ্যে তিনটি কেন্দ্রে ভোট হবে। এর জন্য বুধবার শেষ প্রচারের দিন। তাঁর আগে রাজ্যের প্রথম এবং দ্বিতীয় দফার ছ’টি আসনে স্পর্শকাতর বুথের তালিকা প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর থেকে উত্তরবঙ্গের ছটি আসনে যে স্পর্শকাতর বুথে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ১৮৬২টি বুথ স্পর্শকাতরের তালিকায় রয়েছে।
ভোট ঘোষোণার পর এখন পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে তল্লাশিতে নগদ টাকা, মাদক, নেশাজাত দ্রব্য ও সোনা গয়না সহ ২২৪ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত উদ্ধার হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে শুক্রবার ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় যে তিনটি লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন হবে তার মধ্যে কোচবিহার (Coochbehar) কেন্দ্রের ২০৪৩ টি নির্বাচন কেন্দ্রের মধ্যে ১৯৬টি, আলিপুরদুয়ার (Aliporeduar) লোকসভা কেন্দ্রের ১৮৬৭টির মধ্যে ১৫৯টি এবং জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) কেন্দ্রের ১৯০৪ টি নির্বাচনী বুথের মধ্যে ৩৯১টি স্পর্শকাতর তালিকায় রয়েছে। প্রথম দফার তিনটি কেন্দ্রের মধ্যে জলপাইগুড়িতে সর্বাধিক স্পর্শকাতর বুথের সন্ধিহান দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দ্বিতীয় দফায় দার্জিলিং (Darjeeling), রায়গঞ্জ (Raiganj) ও বালুরঘাট (Balurghat) লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন হবে। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে ১৯৯৯ টি বুথের মধ্যে ৪০০ টি, রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের ১৭৩০ টি বুথের মধ্যে ৪০৮টি ও বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের ১৫৬৯ টি বুথের মধ্যে ৩০৮ টি বুথকে স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
প্রসঙ্গত বালুরঘাট থেকে নির্বাচনে লড়ছেন বিজেপি প্রার্থী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দ্বিতীয় দফায় বাংলায় এই কেন্দ্রেই সবচেয়ে কম স্পর্শকাতর বুথ রয়েছে। দুই দফায় উত্তরবঙ্গের ছটি লোকসভা কেন্দ্রে মোট স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮৬২ টি।
নির্বাচন কমিশনের তরফেদিন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে রাজ্যজুড়ে তল্লাশিতে নগদ টাকা, মাদক, নেশাজাত দ্রব্য ও সোনা গয়না সহ যা বাজেয়াপ্ত হয়েছে তার ভারতীয় মুদ্রায় মূল্য ২২৪ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা। ভোটের আগে বাংলা থেকে এত পরিমাণ অর্থ সামগ্রীর একটা বড় অংশ নির্বাচনে খরচ করার উদ্দেশ্য ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই আগেভাগেই সতর্ক হয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী প্রত্যেক বুথেই সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। দিনক্ষণ হিসেবে দক্ষিণবঙ্গে এখনো নির্বাচনে ঢের দেরি রয়েছে। কিন্তু ছোটখাটো গন্ডগোল শুরু হয়েছে বহু জায়গায়।
প্রথম কয়েক দিন সশস্ত্র বাহিনীকে (Central Forces) এলাকা চেনানো হলেও তারপর বাহিনীকে বসিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এমনকি যে সমস্ত জায়গায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ হচ্ছে সেখানেও পুলিশ নিজে থেকেই আইন-শৃঙ্খলা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। বাহিনীকে সেই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাহলে কী এবারও বাহিনীকে যথাসম্ভব নিষ্ক্রিয় রাখার ছক রয়েছে পুলিশের উঠছে প্রশ্ন।
রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচন কমিশনার অরিন্দম বাগচী জানিয়েছেন তৃতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে।
১৭ মে ভোট হবে জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদহ উত্তর ও মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে। প্রচারের ফাঁকেই মনোনয়ন দাখিলের কাজ চলছে। মালদা উত্তরে ৬ টি, মালদা দক্ষিণ ৩, জঙ্গিপুরে ৫, মুর্শিদাবাদে ৪টি, ভগবানগোলা উপনির্বাচনে এখন পর্যন্ত ১টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এই দফায় ১৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। নির্বাচন যাতে সুস্থভাবে করা যায় তার জন্য ৪১ হাজারের বেশি লাইসেন্স যুক্ত আগ্নেয়াস্ত্র জমা পড়েছে। ৬৪৯টি ফ্লাইয়িং স্কোয়াড ও নজরদারি দল কাজ করছে। এছাড়াও বহু জায়গায় বেআইনি বোমা, গুলি ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত হয়েছে। অভিযুক্তদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
