মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মুর্শিদাবাদে রামনবমীর (Ramnavami) মিছিলে হামলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) দায়ী করলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) । অন্যদিকে এই ঘটনার জন্য এনআইএ তদন্ত দাবি করেছেন। যেহেতু বিষ্ফোরণ ও বৃহৎ চক্রান্তের অংশ হিসেবে অশান্তির ওভিযোগ রয়েছে তাই কেন্দ্রীয় এজেন্সির হস্তক্ষেপ চাইছে গেরুয়া শিবির।
প্রসঙ্গত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে সমস্ত ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে রামনবমীর শান্তিপূর্ণ মিছিলে আশপাশের বাড়ি থেকে পাথর ছোঁড়া হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরে রামনবমীর মিছিল ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। শক্তিপুর হাই স্কুল মোড়ের কাছে রামনবমীর শোভাযাত্রায় দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। রামনবমীর মিছিলটি যখন একটি মসজিদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল, তখনই নাকি হামলা চালানো হয়েছিল। ঘটনার জেরে উত্তেজনা বাড়তে দেখে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়েতে হয় পুলিশকে।
এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত দাবি করেছেন বর্ধমান দুর্গাপুর (Bardhaman Durgapur) লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষও। বর্ধমানের অফিসার্স কলোনির মাঠে প্রাত:ভ্রমণ করেন। তারপর বীরহাটা বাজারের সামনে চা চক্র অনুষ্ঠানে অংশ।
সেখানে তিনি বলেন, মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) রামনবমীর শোভাযাত্রায় ইটপাথর বোমা মারার চেষ্টা হয়েছিল। আমি বলেছিলাম যারা এই ধরনের বদমাইশি করত তারা আর করবে না এটা।
কিন্তু কয়েকদিন ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় “দাঙ্গা দাঙ্গা” বলে, বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায়কে উস্কাবার চেষ্টা করেছে। অনেকবার করিয়েছেন। তারা তার প্ররোচনায় পা দিয়ে বদনাম হয়েছে। আমি বলছি মুসলমান সমাজের দাঙ্গা করার দরকার নাই। তারা বুঝতে পেরেছেন ভারতবর্ষে মোদীর রাজত্বে মিলেমিশে থাকতে হবে, উন্নয়ন করতে হবে, সুখে থাকতে হবে।তারাও উন্নয়নের সব সুবিধা পেয়েছেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতি হল হিন্দু মুসলিম ভাগাভাগি করে ইলেকশন জেতা।”
তার কথায়, “যখন মুসলিমরা রাস্তায় নেমে বিরোধিতা করেন নি। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু ভাড়াটিয়া লোকদের নিয়ে এধরণের উৎপাত করেছেন।হিন্দু মুসলমান টেনশন করার চেষ্টা করেছেন পশ্চিমবঙ্গে। কারণ এবার মুসলমানরা টিএমসিকে ভোট দেবে না। তারা বিরোধিতা করছে। তারা সব থেকে বেশী বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছে। জেলের মধ্যে ৯৫ পারসেন্ট মুসলিম জেলে বন্দী। ক্রিমিনাল কেস দিয়েছে।”
হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মুসলিম ছেলেমেয়েকে কেস দিয়েছে টিএমসি। যাতে তারা ওদের হয়ে কাজ করে। কিন্তু ওরা বুঝতে পেরেছে তাদের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করা হচ্ছে। তারা টিএমসিকে ভোট দেবে না। তাদের ভয় দেখানো হচ্ছে, উসকানো হচ্ছে। আমি ধন্যবাদ জানাবো মুসলিম সমাজকে। তারা রামনবমীতে অংশ গ্রহণ করেছেন, সহযোগিতা করেছেন। সম্প্রতির পরিবেশ তৈরি করেছে। যাদের বিভাজনের রাজনীতি, টিএমসি তারা ভাড়াটিয়া গুণ্ডাদের নিয়ে এইধরনের উৎপাত করে রামনবমীর মিছিলে বোমা, পাথর মেরেছে।”
কালনায় অভিষেক ব্যানার্জীর কর্মী বৈঠক করতে আসা নিয়ে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে বলেন, “করে নিন। কর্মী থাকলে তো করবেন।”
তৃণমূল কংগ্রেসের ইস্তাহারে সিএএ ও এনআরসি রোধ করার বিষয় নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ওরা জানে সারা জীবন থাকলেও হবে না।কারণ দিল্লিতে সরকার গঠন করতে হবে। দিল্লীতে সরকার গঠন করতে গেলে ২৭২সিট চায়। সমস্ত বিরোধী মিলে তার আধাও পাবে না।তাই তারা যা ইচ্ছে তাই বলে। তারা আগেও বিরোধীতা করেছে। কিছুই করতে পারবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের যত প্রকল্প আছে সবের বিরোধিতা করেছে। ৩৭০ ধারা, তিন তালাক সবের বিরোধিতা করেছে। কিছুই করতে পারে নি।দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন আগামী দিনেও থাকবে।
রেশন প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “ উনি (মমতা) বলেছিলেন সারা জীবন রেশন দেবেন। এক কেজিও দিতে পারেন নি। উনি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেন। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার দিলীপ ঘোষের জন্মদিন। তাই ৭ নম্বর মণ্ডল সভাপতি সোমনাথ দাস দিলীপ ঘোষকে জন্মদিনের উপহার হিসেবে একটি পেন দেন। সেখানেও তিনি রাফ এ্যাণ্ড ট্যাফ।তিনি বলেন,আমার জন্মদিনে ভুল করে একজন পেন উপহার দিয়েছেন। আমার পাশে ইঞ্জিনিয়ার আমার জেলা সভাপতি আছে, ওনার পেন লাগে। আমার হাতে লাঠি লাগতে সবার ভাল লাগে সবার। নিজের জন্মদিনে এক কর্মীর পেন উপহার দেওয়া প্রসঙ্গে মন্তব্য করলেন দিলীপ ঘোষ।”
বৃহস্পতিবার সকালে প্রাত:ভ্রমণ সেরে বর্ধমানের বীরহাটা এলাকায় চায়ে পে চর্চায় যোগদেন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। সেখানে বিজেপির মহিলা কর্মীরা দিলীপ ঘোষকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। এরই মাঝে শহর বিজেপির ৭ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি সোমনাথ দাস দিলীপ ঘোষের জন্মদিন উপলক্ষে একটি পেন উপহার দেন তাকে। পেন উপহার পেয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন,আমার হাতে লাঠি লাগতে সবার ভাল লাগে সবার।