নিউজ
ডেস্ক: সোমবার সাতসকালে দুর্ঘটনার কবলে
শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ১১। আহতের
সংখ্যা প্রচুর। ওই ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলেন নদীয়ার শান্তিপুরের
থানার মোড়ের বাসিন্দা তপন বিশ্বাস এবং
কমলা বিশ্বাস। সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী।
তাঁরা গিয়েছিলেন ত্রিপুরায় তাঁদের মেয়ের
বাড়ি। সেখান থেকে আসার সময় এই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাঁরা । তবে সেখান থেকে আসার পর
এখনও পর্যন্ত আতঙ্কের রেশ কাটেনি তাঁদের।
গতকালের সেই ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে এখনও শিউরে উঠছেন তপন
বাবু।
তিনি জানাচ্ছেন, কাল হঠাৎ সকালবেলায় ট্রেনে বাথরুমে
গিয়েছিলেন। তখনই হঠাৎ পিছনদিকে সজোরে ধাক্কা লাগার
ফলে ঝাঁকুনি অনুভব হয়। ট্রেনের বগিতে তিনি ছিলেন এসি কম্পার্টমেন্টের বিওয়ান
কোচের একত্রিশ এবং ৩২ নম্বর সিটে। তবে এই ঘটনা ঘটার পরই রেলে উপস্থিত সাফাই
কর্মীদেরকে তিনি জানান বাইরে কি হয়েছে দেখতে? সাফাই কর্মীর
বাইরে তাকিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে বলেন, ট্রেন থেকে নেমে যান। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় রেলের সমস্ত বগি উল্টে
গেছে। সেই সময় প্রাণ বাঁচাতে কোনও রকমে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে বেরিয়ে পড়েন তপন
বাবু। এরপর রেলের তরফ থেকে দেওয়া অ্যাম্বুলেন্সে করে পৌঁছন নিউ জলপাইগুড়ি
স্টেশন। তারপর সন্ধ্যের দিকে তিস্তা তোর্সা ট্রেন দেওয়া হয়
আহতদের এবং ট্রেনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের একসঙ্গে নিয়ে
আসার জন্য। আর সেই ট্রেনে সেই অন্ধকার সময়ের স্মৃতি মাথায় নিয়ে বাড়ি ফেরেন তপন
বাবু এবং তার স্ত্রী। তবে রেল কর্তৃপক্ষ আহত ব্যক্তিদেরকে যে ট্রেন দিয়েছিল
সেখানে খাবারের ব্যবস্থা ছিল না।
কমলা দেবী জানান তিনি বসেছিলেন আর তারপরেই ভয়ানক শব্দে রীতিমতো
কেঁপে ওঠে কম্পার্টমেন্ট। তারপরেই হঠাৎ করে চোখের নিমেষে কি যে হয়ে গেল কিছুই
বুঝতে পারলেন না। তারপর তার স্বামী চিৎকার করে ডাকতে তিনি কোন রকমে প্রাণ বাঁচাতে
ট্রেন থেকে বেরিয়ে আসেন। তবে এখনো কাল সকালের সেই অন্ধকার সময়ের কথা মাথায় আসলে
রীতিমতো শিউরে উঠছেন তিনি। তবে বর্তমানে তাঁরা দুজনেই কমবেশি আহত হয়েছেন এবং পরবর্তীতে শান্তিপুর
হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাবেন বলেও সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন। এই
দম্পতি বাড়ি ফিরে আসার পর শান্তিপুর থানার তরফে তাঁদের
সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।