নিউজ ডেস্ক: বাংলার স্বাদে ও আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে ব্রিটানিয়া বিস্কুট। আর সেই আবেগে আঘাত পড়ল সোমবার। তারাতলায় প্রোডাকশন বন্ধ হয়ে গেল ব্রিটানিয়া কোম্পানির (Britannia Factory Closed)। সূত্রের খবর, কোম্পানিতে স্থায়ী কর্মী ছিলেন ১২২ জন এবং অস্থায়ী কর্মী ছিলেন ২৫০ জন। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে ২০১১ সালের পরে এই নিয়ে মোট ১৫টি কারখানা বন্ধ হল তারাতলা শিল্পাঞ্চলে।
কারখানা বন্ধের এই ঘটনায় তৃণমূলের তোলাবাজিকেই সরাসরি দায়ী করছে বিজেপি। এ প্রসঙ্গে বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মলব্য তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে বলেছেন, “আজকের ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানার বন্ধ (Britannia Factory Closed) হয়ে যাওয়া বাংলার একসময়ের গভীর বিশৃঙ্খলার প্রতিফলন।” একইসঙ্গে কারখানা বন্ধের জন্য বাম শাসন আমলে সিপিআই(এম) এর ‘ইউনিয়নবাজি’ এবং টিএমসির ‘তোলাবাজি’ (চাঁদাবাজি) এর সম্মিলিত প্রভাবকে দায়ী করেছেন তিনি। তিনি আর বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, বাংলার ভাগ্য এখন ‘ইউনিয়নবাজি’ এবং ‘তোলাবাজি’র জোড়া অভিশাপে আটকে পড়েছে। এখন একটাই প্রশ্ন, এই অভিশাপ থেকে কবে মুক্তি পাবে বাংলা?”
অন্যদিকে অমিত মালব্যর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (BJP blames on TMC) বলছেন, ”এমন একটি দল, যারা সারাক্ষণ তোলাবাজি করে, তাদের উপস্থিতিতে সেখানে শিল্প আসবে না। মুখ্যমন্ত্রীরও শিল্প-বিরোধী ভাবমূর্তি রয়েছে।”
যদিও বিজেপির এই আক্রমণের পাল্টা আঘাত হেনে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলছেন, ”সংশ্লিষ্ট সংস্থার ম্যানেজমেন্টের নিজস্ব সমস্যা রয়েছে। যারা এটিকে রাজ্যের সামগ্রিক শিল্প পরিস্থিতির সঙ্গে মেশাচ্ছেন, তাঁরা ভুল করছেন।”
অস্থায়ী কর্মীদের অভিযোগ, ২০০৪ সাল থেকে যে আড়াইশো জন অস্থায়ী কর্মী কাজ করছিলেন তাঁদেরকে কোম্পানি কোনও টাকাপয়সা না দিয়ে এই কোম্পানি বন্ধ (Britannia Factory Closed) করে দিয়েছে। তবে জানা গিয়েছে, স্থায়ী কর্মী যাঁরা ১০ বছরের উপরে চাকরি করছেন, তাঁদের এক এক জনকে ২২ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছে কোম্পানি। ছয় থেকে দশ বছরের নিচে যাঁরা চাকরি করেছেন তাঁদেরকে ১৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দিয়েছে কোম্পানি। এর নিচে যাঁরা চাকরি করেছেন তাঁদেরকে ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েছে কোম্পানি। কিন্তু অস্থায়ী কর্মীদের কোনও টাকা পয়সা এখনও পর্যন্ত দেয়নি কোম্পানি বলেই অভিযোগ।
কিন্তু কী কারণে কলকাতার (Kolkata) একমাত্র ব্রিটানিয়া কারখানা বন্ধ হয়ে গেল? ব্যবসায় মন্দা? নাকি শ্রমিক সমস্যা? এনিয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে কিছু জানানো হয়নি। তবে ব্যবসায়িক দিক থেকে কোনও সমস্যা হয়নি বলেই মত শ্রমিকদের একাংশের। এখনও বঙ্গে ব্রিটানিয়ার খাদ্যসামগ্রী বিক্রিতে অন্য যে কোনও সংস্থার চেয়ে যথেষ্ট এগিয়ে। তবে কেন বন্ধ হল কারখানা (Britannia Factory Closed) সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।