নিউজ ডেস্ক: রাশিয়ার মুসলিম
সংখ্যাগরিষ্ঠ দাগেস্তান অঞ্চলে দুটি সিনাগগ (ইহুদি উপাসনালয়), দুটি গির্জা এবং একটি পুলিশ চৌকিতে জঙ্গিরা
হামলা চালিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ডারবেন্ট এবং মাখাচকালা শহরে এই প্রাণঘাতী
হামলায় ১৫ জনেরও বেশি পুলিশ অফিসার এবং ৪ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে একজন নিকোলাই কোটেলনিকভ নামে পাদরি, জঙ্গিরা
তাঁকে নির্মমভাবে গলার নলি কেটে হত্যা করেছে। তিন মাসের মধ্যে এটি দ্বিতীয় বড়
জঙ্গি হামলা।
আধিকারিকদের বক্তব্য
দাগেস্তান পাবলিক মনিটরিং কমিশনের চেয়ারম্যান, শামিল খাদুলায়েভ বলেন , “আমি যে তথ্য পেয়েছি তা হল ফাদার নিকোলেকে
ডারবেন্টের চার্চের ভিতরে হত্যা করা হয়। জঙ্গিরাতাঁর গলা কেটে ফেলে। তিনি ৬৬ বছর
বয়সী এবং খুব অসুস্থ ছিলেন।দেশের সন্ত্রাসবিরোধী
কমিটির তথ্য অনুযায়ী, মোট ৫ জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জঙ্গিরা বন্দুক ও মোলোটভ
ককটেল নিয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা করে। ককটেল বোমা ছোড়ার পর
তাঁরা নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে। রাস্তায় সাধারণ মানুষের গাড়ি লক্ষ্য করে
গুলি ছোড়া হয়।
হামলার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায়
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়
যে ডারবেন্টে অবস্থিত একটি সিনাগগ সন্ত্রাসীরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। মাখাচকালায় একটি সিনাগগ এবং একটি পুলিশ ট্রাফিক পোস্টও হামলার শিকার
হয়।দাগেস্তানের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে উপাসনালয়গুলোকে টার্গেট
করার নিন্দা জানিয়েছে ইজরায়েল। দেশটির বিদেশ
মন্ত্রক জানিয়েছে, “ডারবেন্টের সিনাগগে আগুন
লাগিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নিহত হয়েছেন স্থানীয় রক্ষীরা।”
দাগেস্তানে
তিন দিনের শোক পালন
জানা
গিয়েছে, হামলার সময় উপাসনালয়ে কোনও উপাসক ছিল না এবং ইহুদি
সম্প্রদায়ের কোনও হতাহতের ঘটনাও জানা যায়নি। রাশিয়া সোমবার (২৩ জুন) থেকে এই
অঞ্চলে ৩ দিনের শোক ঘোষণা করেছে। রাশিয়ান ফেডারেশনের ক্রিমিনাল কোডের অধীনে জঙ্গি
হামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। জঙ্গি হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। সোমবার দাগেস্তানের গভর্নর সের্গেই মেলিকভ ভিডিও
বার্তায় বলেছেন, দাগেস্তান ও পুরো দেশের জন্য
এটা খুবই দুঃখের দিন। আমরা বুঝতে পারছি, এসব সন্ত্রাসী
হামলার পেছনে কোন সংগঠন জড়িত এবং তারা কোনও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যনিয়ে হামলা চালিয়েছে। যদিও দায়ী হিসেবে কোনও
সংগঠন বা ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেননি সের্গেই মেলিকভ।”
প্রসঙ্গত মার্চ মাসে একটি সঙ্গীতের অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। সেবার হামলাত
দায় নিয়েছিল আইসিস খুরাসান। সেই হামলায় ১৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। তিন মাসের
মধ্যে ফের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে হামলা মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে পুতিন
প্রশাসনের।