নিউজ ডেস্ক: মহাকাশে ‘আটকে’ রয়েছেন সুনীতা উইলিয়ামস (Sunita Williams)। তিনি ও তাঁর সহযাত্রী ব্যারি বুচ উইলমোর আপাতত ফিরতে পারবেন না পৃথিবীতে। এমনটাই জানিয়েছে নাসা (NASA)। প্রথমে জানা গিয়েছিল, ২৬ জুন তাঁরা ফিরবেন। কিন্তু এখন নাসা সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত তাঁদের ফেরা সম্ভব নয়। ত্রুটি ধরা পড়েছে তাঁদের মহাকাশযানে। যে মহাকাশযানে তাঁরা গিয়েছিলেন তাতে আর ২৬ দিনের জ্বালানি বাকি রয়েছে। তাই সুনীতাদের পৃথিবীতে ফেরা নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে।
মহাকাশযান বোয়িং স্টারলাইনারকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে সমস্যা। গত ৫ জুন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পাড়ি দিয়েছিলেন সুনীতা (Sunita Williams)। উৎক্ষেপণের পরেই একাধিক যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে তাঁদের মহাকাশযানে। না ঘুমিয়ে নিজেরাই সেই ত্রুটি মেরামত করেন নভশ্চররা। এরপর যাবতীয় সমস্যা পেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যায় তাঁদের মহাকাশযান। কিন্তু ফের যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ছে তাঁদের যানে। তাই মহাকাশ স্টেশনেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাঁদের। জানা গিয়েছে সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর সহযাত্রী বুচ উইলমোর দুজনেই সেই আইএসএসে নিরাপদেই রয়েছেন। তাদের সঙ্গে আরও সাতজন ক্রু মেম্বার রয়েছেন।
থ্রাস্টার ট্রাবল শুটিং এবং নির্ধারিত স্পেসওয়াকের কারণে মহাকাশযানটি ফেরত আসতে বিলম্ব হবে বলে জানিয়েছে সিএনএন। স্টিচের মতে,’আমাদের দলের ডেটা দেখার জন্য আরও কিছুটা সময় লাগবে, এরপর আমরা নিশ্চিত করবে যে আমরা সত্যিই বাড়িতে আসতে প্রস্তুত।’বোয়িংয়ের কমার্শিয়াল ক্রু প্রোগ্রামের প্রধান মার্ক নাপ্পি বলেন, ‘আমরা এটিকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছি। এক্ষেত্রে স্টেশনে থেকে আরও কাজ করার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে।’ একবার নাসা মহাকাশচারীদের ফিরে আসার সবুজ সংকেত দিলে, স্টারলাইনারের থ্রাস্টারগুলি আইএসএস থেকে ক্যাপসুলটিকে আনডক করতে ব্যবহার করা হবে। এরপর ছয় ঘণ্টায় পৃথিবীতে পৌঁছে যাবেন সুনীতারা (Sunita Williams)। তাঁরা ৬ জুলাই পৃথিবীতে ফিরতে পারেন। নাসা (NASA) বলেছে যে প্রপালশন সিস্টেমে ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও, স্টারলাইনার মহাকাশচারীদের সঙ্গে করে পৃথিবীতে ফিরে আসতে সক্ষম। স্টারলাইনারকে সম্পূর্ণ অকেজো ঘোষণা করা হলে স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগনের মাধ্যমে মহাকাশচারীদের ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। মার্চ মাসে, ক্রু ড্রাগন চার নভোচারীকে মহাকাশ স্টেশনে নিয়ে যায়। জরুরী পরিস্থিতিতে, ক্রু ড্রাগনে আরও নভোচারী বসানো যেতে পারে।
২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারি মহাকাশ অভিযান শেষ করে স্পেস শাটল কলম্বিয়ায় পৃথিবীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন কল্পনা চাওলা ও তাঁর সঙ্গীরা। ১লা ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর মাটি ছোঁয়ার ১৬ মিনিট আগে ভেঙে পড়ে কলম্বিয়া। মৃত্যু হয় কল্পনা-সহ বাকি নভোশ্চরদের। তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, মহাকাশযান সবদিক থেকে ঠিকঠাক ছিল। খালি হাইড্রোলিক ট্যাঙ্কের তরল দ্রুত কমে আসছিল। এতেই মহাকাশযানের সেন্সর সিস্টেমে গড়বড় শুরু হয়। এবার মহাকাশে আটকে রয়েছেন আরও এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। এর আগে ২০০৬ ও ২০১২ সালে মহাকাশ অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন সুনীতা (Sunita Williams)। সব মিলিয়ে ৩২২ দিন মহাকাশে কাটানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। তিনি শুধু ভারতীয় বংশোদ্ভূত নন, ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গেও তাঁর যোগ রয়েছে। তাই তাঁকে উদ্বিগ্ন ভারতও।