নিউজ ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার (Cooch Behar) লোকসভা
কেন্দ্রে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে
হারিয়ে জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী জগদীশচন্দ্র
বর্মা বসুনিয়া। অভিযোগ নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই দিকে দিকে বিজেপি কর্মী
সমর্থকরা শাসকদলের সন্ত্রাসের শিকার
হচ্ছেন। কারও বাড়িঘর ভাঙচুর আবার
কাউকে টাকার জন্য হুমকি। তবে এবারের ঘটনা সবকিছুর মাত্রা অতিক্রম
করল। এক সংখ্যালঘু মহিলাকে বিজেপি করার অপরাধে এক কিলোমিটার
রাস্তা চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে এসে এক মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর করার অভিযোগ
উঠলে। আক্রান্ত ওই মহিলা কোচবিহার হাসপ্তালে ভর্তি।
বিজেপি করায় উলঙ্গ করে মারধর মহিলাকে
জানা গিয়েছে কোচবিহার
জেলার মাথাভাঙ্গা বিধানসভার ২ নং ব্লকের রুইডাঙ্গা অঞ্চলের রাম ঠেঙ্গা বাজার
সংলগ্ন এলাকার ঘটনা।বুধবার এই ঘটনার
জেরে চরম অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে জেলা জুড়ে। রোশনআরা খাতুন নামে বিজেপি মহিলা কর্মীকে বিবস্ত্র করে পুকুরের জলে চুবিয়ে বেধড়ক
মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রায় এক ঘণ্টা অজ্ঞান থাকার পর তাঁকে প্রথমে ঘোকষডাঙ্গা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও
পরবর্তীতে কোচবিহার (Cooch Behar) মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ন
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই তিনি
চিকিৎসাধীন। আক্রান্ত ওই মহিলা বলেন, “বাড়ির পাশে নদীর
পাড়ে গরু বাঁধার জন্য গিয়েছিলাম। যখন
ফিরে আসছি সেই সময় একজন মহিলা হাতে কাঁচি নিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসে। আমি ভাবলাম হয়ত ঘাস কাটতে যাচ্ছে। সেই সময় ওই মহিলারসঙ্গে
থাকা অন্যান্য মহিলারা আমাকে ধরে ফেলে। এরপর আমার চুলের মুঠি
ধরে প্রায় এক কিলোমিটার গোবর মাটি লাগা অবস্থায় টেনে নিয়ে
আসে। এরপর চুলের মুঠি ধরে আমাকে জলে চুবাচ্ছিল এবং আমার সমস্ত কাপড় খুলে উলঙ্গ করে দেয়। এবং আমার
মাথার সব চুল ছিঁড়ে নেয়। আমি বিজেপি করি আর ওরা টিএমসি করে। এই জন্যই আমার এই অবস্থা করেছে।” তিনি আরওজানানতাঁকে মারধর করার
সময় বলা হয়, মুসলিম হয়ে কেন বিজেপি করছিস?
মুসলিম পাড়ায় থেকে বিজেপি করছিস। আজ জলে চুবিয়ে মেরে ফেলব।
এরপর পুরুষদের দেখিয়ে ধর্ষণ করতে বলা হয়। রোশনআরা আরও
বলেন, “এরপর যখন আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল,
তখন আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। এরপর আমি জানি না কী হয়। আমার মায়ের বাড়ির সামনে উলঙ্গ অবস্থায় ফেলে রাখে। পুলিশ গিয়ে ছবি তোলে। এলাকার
তৃণমূলের লোকেরা প্রতিদিন হুমকি দেয়। বিজেপি করলে দুনিয়া থেকে গায়েব করে দেবে বলছে। যারা আমার সাথে
এই ঘটনা ঘটিয়েছে,তাঁদের আমি ফাঁসি
চাই।”
তৃণমূলের বক্তব্য
এই ঘটনার পর আক্রান্ত
মহিলার পিতা বজলে রহমান ঘোকসারডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। শেষ পাওয়া
খবর পর্যন্ত এখনও পর্যন্ত তিনজন মহিলাকে আটক
করেছে ঘোকষডাঙা থানার পুলিশ। বজলে রহমান বলেন,“আমার মেয়ে মহিলা মোর্চার সদস্য। বিজেপি (Cooch
Behar) হেরে যাওয়ার পর থেকেই তৃণমুলীরা বাড়ি
থেকে বের হতে দেয় না। আমরা বিজেপি করি তার জন্যই এই ঘটনা। আমাকেও
বাড়ি ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি দেয়। বাড়ি থেকে বের হতে দেবে
না, এই হুমকি দেয়।” যদিও এই প্রসঙ্গে
কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন,“কিছু না জেনে কোন মন্তব্য করা যাবে না” আমি জেনে বলব।”