নিউজ ডেস্ক: দেশে প্রবেশ করেছে বর্ষা। তীব্র গরম কেটে সবে নিস্তার মিলতে শুরু করেছে। তবে বর্তমানে স্বস্তি মিললেও কিছুদিন আগেও গরমে নাজেহাল অবস্থা ছিল দেশবাসীর। একনাগাড়ে তাপপ্রবাহের জেরে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু (Death for Heatwave) হয়েছে বহু মানুষের। কোথাও আবার জল-বিদ্যুতের জন্য হাহাকার। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার তাপপ্রবাহ গত ১৪ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। পরিসংখ্যান বলছে চলতি বছরে গোটা দেশজুড়ে (India) প্রায় ৪০ হাজার মানুষ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। অতিরিক্ত গরম সহ্য করতে না পেরে একশোরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের পরিভাষা অনুযায়ী ‘হিটওয়েভ ডেজ’-এর একটি তুলনায় দেখা গেছে যে এবছর তাপপ্রবাহ সবচেয়ে বেশি দিন স্থায়ী হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, ‘গ্রীষ্মকালে মোট ৫৩৬ দিন তাপপ্রবাহের শিকার (Death for Heatwave) হয়েছেন দেশবাসী। ১৯০১ সালের পর থেকে দেশের উত্তর পশ্চিম অঞ্চলে সবথেকে উষ্ণতম মাস ছিল জুন। ২০১০ সালে মোট ৫৭৮ দিন তাপপ্রবাহের শিকার হতে হয়েছিল দেশবাসীকে। ২০২৪ সালের সেই সংখ্যা ৫৩৬ দিন। ২০১০ সালে জুন মাস থেকে একনাগারে ১৭৭ দিন তাপপ্রবাহ চলেছিল। আর ২০২৪ সালের জুন মাস থেকে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮১ দিনে।
উত্তর পশ্চিম ভারতে (India) মাসজুড়ে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা স্বাভাবিকের থেকে ১.৯৬ ডিগ্রি বেশি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ১.৩৫ ডিগ্রি বেশি। উত্তর-পশ্চিম ভারতে জুন মাসে গড় তাপমাত্রা ৩১.৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের থেকে ১.৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ও ১৯০১ সালের পর সর্বাধিক। আবহাওয়াবিদদের মতে, ১০ জুন থেকে ১৯ জুন সময়কালে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার অনুপস্থিতিও উত্তর পূর্ব ভারত ও মধ্য ভারতে তাপপ্রবাহ ও শুষ্ক আবহওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যসময় যেখানে ৫ থেকে ১০ জুন-১৯ থেকে ২৫ জুন ও ২৬ থেকে ২৮ জুনের মধ্যে চার পাঁচটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা তৈরি হয় সেখানে এবার মাত্র তিনটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা তৈরি হয়েছিল।
উল্লেখ্য, এ বছর রাজস্থানের তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। অন্যদিকে রাজধানীতে (Delhi) একটানা ৪০ দিন ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। আবহাবিদদের মতে পরিবেশের উপর অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ, নির্বিচারে গাছ কাটা, জলবায়ু দূষণই এই তাপপ্রবাহের মূল কারণ। ফলে বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে উত্তরোত্তর আরও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে বলেই জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। তাই এখন থেকেই সংযত না হলে ভবিষ্যতে এর চেয়েও খারাপ দিন দেখতে হবে দেশবাসীকে।