নিউজ ডেস্ক: সকালে প্রাতঃভ্রমণ সেরে বাজারে যেতেই ভয় পাচ্ছেন শহরবাসী। ভরা বর্ষায় বাজার আগুন (Price Hike)। মাছ-মাংস তো দূরে থাক, ক্রমশ আম বাঙালির নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে আনাজের দামও। সামান্য সবজি কিনতেই পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। কলকাতার বাজারে (Kolkata Market) বেগুন ১৫০-২০০ টাকা কেজি, টম্যাটো ১০০, লঙ্কা ১৫০, উচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, সজনে ডাঁটা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৮০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা কেজিতে বিকোচ্ছে। চাল-ডালের দামও যে খুব একটা নিয়ন্ত্রণে আছে, তা নয়।
মাসখানেক ধরেই শহরের বাজার একেবারে আগুন (Price Hike)। বাঙালির হেঁশেলে যা যা লাগে, সবের দামই চড়া। এই পরিস্থিতিতে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বাজার কমিটির সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বৈঠকে থাকবেন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি, টাস্ক ফোর্স, পুলিশের কর্তা, বিভাগীয় মন্ত্রী, সচিবরা। কী পদক্ষেপ করা যায়, সেখানে আলোচনা করে দেখা হবে। বিরোধীদের অভিমত, প্রতিবছরই পুজোর আগে এসময় জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। হাত ছোঁয়ানো যায় না আনাজে। এ তো সবে শুরু। পুজো যত এগিয়ে আসবে দামও ততই বাড়বে। কিন্তু কোনওবারই এ নিয়ে বিশেষ পদক্ষেপ করে না সরকার। খুচরো তথা পাইকারি বাজারে আড়তদাররা দাম বাড়াতেই থাকেন। অতিরিক্ত লাভের আশায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ায় বিক্রেতারা। সরকার উদাসীন।
ফসলের এই মূল্যবৃদ্ধির (Price Hike) জন্য আবহাওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। জুলাই মাসের মাঝামাঝি হতে চললেও, যে পরিমাণ বর্ষার প্রয়োজন ছিল, তা দেখা যায়নি। বৃষ্টি হলেও, তা পর্যাপ্ত নয়। কৃষকরা জানিয়েছেন, এই সময় যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা, তা হয়নি। ফলে প্রচুর শাক-সবজি মাঠে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ব্যবসায়ীদের মতে, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে, শহরের বাজারে (Kolkata Market) দাম কমার সম্ভাবনা আপাতত নেই। এক শ্রেণি অসাধু চক্র কৃত্রিমভাবে এই সবজির দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে সরকারের অভিমত। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। যদিও বিরোধীদের দাবি, সরকার ঠুঁটো। সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অক্ষম প্রশাসন। রাজ্যজুড়ে দুর্বৃত্ত চক্রের বাড়বাড়ান্ত, ভোটের পর তা আরও বেড়েছে।
জ্যোতি আলু- ৩৫ টাকা। চন্দ্রমুখী আলু- ৪০ টাকা কেজি। পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকা কেজি। বেগুন- ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। পটল- ৫০ টাকা। কাঁচা লঙ্কা- ১৫০ টাকা। টমেটো- ৮০ আশি টাকা ঢেঁড়শ- ৬০ টাকা। বিন- ৩০০ টাকা। শসা- ৮০ টাকা। করোলা- ৮০ টাকা। পেঁপে- ৫০ টাকা। রসুন- ৩০০ টাকা। আদা- ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। বিট- ৬০ টাকা। গাজর- ৬০ টাকা কেজি। মিনিকেট চাল- ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। বাঁশকাঠি চাল- ৬০ টাকা। গোবিন্দভোগ চাল- ৯০ টাকা। দেরাদুন রাইস- ১২০ টাকা। আটা ও ময়দা- ৩৪ টাকা কেজি। অড়হড় ডাল- ১৮০ টাকা। মসুর ডাল- ১০০ টাকা। মুগডাল- ১০০ টাকা। ছোলার ডাল- ১০০ টাকা। সরষের তেল- ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। সয়াবিন তেল- ১০২ টাকা। সূর্যমুখী তেল- ১২২ টাকা। বাদ যাচ্ছে না মশলাও। তাতেও লেগেছে আগুন। জিরে (আস্ত)- ৪০০ টাকা। হলুদ- ৩০০ টাকা। শুকনো লঙ্কা- ৩৫০ টাকা। চিনি- ৪৮ টাকা। ধনে- ৪০০ টাকা। পোস্ত- ১৫০০ টাকা। সবজি-আনাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাছ-মাংসের দামও চড়া। কাতলা কেজিতে ৪০০-৪৫০ টাকা, ট্যাংরা ৭০০, পাবদা ৬০০-৭০০, পমফ্রেট ৮০০ টাকা কেজি, ভেটকি ৮০০, বাগদা চিংড়ি ৮০০, গলদা চিংড়ি ৭০০-৮০০ টাকাতে বিকোচ্ছে। এক কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকায়। ইলিশের ওজন দেড় কেজির বেশি হলে গুনতে হচ্ছে ১৮০০ টাকা। মুরগির মাংস ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে কেজিপ্রতি হয়েছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা৷