নিউজ ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ব্যবস্থা (Protest in Bangladesh) বাতিলের দাবিতে প্রায় ১৫ দিন ধরে আন্দোলনে উত্তাল হচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলন আরও উগ্র রূপ নিচ্ছে। মঙ্গলবার ঢাকা সহ বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই সঙ্ঘর্ষে অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগ যুক্ত হয়ে যৌথভাবে হামলা চালিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের উপরে হামলা চালাচ্ছে সাধারণ পোশাকে থাকা বহু যুবক।
ছাত্রদের মূল দাবি কোটা ব্যবস্থা (Quota system) পুরোপুরি তুলে দিতে হবে। তবে তাঁদের সবচেয়ে বেশি সমস্যা মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের কোটা নিয়ে। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য ৫০ বছর আগে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, তাঁদের নাতি নাতনিরাও যুগ যুগ ধরে কেন অতিরিক্ত সুবিধায় ভোগ করবেন। তবে এবার তাঁরা চান কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ তুলে দিয়ে সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে চাকরিতে নিয়োগ হোক। তবে কোটা ব্যবস্থার মাঝেও চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জুড়ে ঘুষের বাড়-বাড়ন্ত রয়েছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। সেই ঘুষ ব্যবস্থাও সমাপ্ত করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে তাঁরা। বাংলাদেশের প্রথম সারির একটি সংবাদপত্র জানাচ্ছে, চট্টগ্রামে (Protest in Bangladesh) নিহত হয়েছেন তিনজন। রাজধানী ঢাকায় নিহত হয়েছেন দুজন। এবং রংপুরে একজন। মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকায় সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র যুবদের মিছিলে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ।
২০১৮ সালেও সংরক্ষণ-বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট ৫৬ শতাংশ (Quota system) সংরক্ষিত এবং ৪৪ শতাংশ সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল। এই ৫৬ শতাংশের মধ্যে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন জেলার জন্য ১০ শতাংশ, জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত পদ ছিল। ২০১৮-য় কোটা-বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী হাসিনা নির্দেশ জারি করে মুক্তিযোদ্ধার স্বজনদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং জেলা খাতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিল করে দেন।রাখা হয় শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ১ শতাংশ সংরক্ষণ। তখনকার মতো আন্দোলনে ইতি টানেন ছাত্ররা। পরে আদালতের নির্দেশে ফের কোটা ব্যবস্থা বহাল হওয়ায় শুরু হয় আন্দোলন। তবে সরকারের তরফে এখনও তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়নি।