নিউজ ডেস্ক: ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। পুড়ে গেল ভারতীয় নৌবাহিনীর রণতরী ‘আইএনএস ব্রহ্মপুত্র’ (INS Brahmaputra)। জানা গিয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণের সময় আগুন লেগে এই বিপত্তি ঘটে। বিশাল ‘গাইডেড মিসাইল ফ্রিজেট’ যুদ্ধ জাহাজটিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চালিয়ে সোমবার সকালে অবশেষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল বাহিনী। আগুন লাগার ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার জেরে নৌসেনার এক নাবিক (Indian Navy) নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।
নৌবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, মুম্বইয়ের ডকইয়ার্ডে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছিল যুদ্ধজাহাজটিতে। রবিবার রাতের দিকে কোনও ভাবে আগুন লেগে যায় রণতরীটিতে। সোমবার সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও দেখা যায় জাহাজটি ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুপুরের দিকে জাহাজটির একদিক হেলতে শুরু করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও হেলে যায়। নৌসেনার তরফে জানানো হয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের পর জাহাজের সকল নাবিক ও কর্মীদের উদ্ধার করা সম্ভব হলেও একজন অধস্তন নাবিকের খোঁজ এখনও মেলেনি। বর্তমানে ডকে নির্দিষ্ট বার্থে হেলানো অবস্থাতেই রয়েছে আইএনএস ব্রহ্মপুত্র।
নৌবাহিনীর তরফে বিবৃতিতে বলা হয়, ”দমকলবাহিনী ও যুদ্ধজাহাজের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এর পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখা হয়। চলে স্যানিটাইজেশনের কাজ।”
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে শর্ট সার্কিটের কারণেই এই অগ্নিকাণ্ড। তবে পিছনে কোনও নাশকতার ষড়যন্ত্র রয়েছে তা জানতে ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভারতীয় নৌসেনার তরফে।
এ
২০২০ সালে ভারতীয় নৌসেনায় অন্তর্ভুক্ত হয় রণতরী আইএনএস ব্রহ্মপুত্র (INS Brahmaputra)। এই যুদ্ধ জাহাজ সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি ব্রহ্মপুত্র শ্রেণির প্রথম মিসাইল ফ্রিগেট জাহাজ। এই জাহাজে মোতায়েন রয়েছেন ৪০ আধিকারিক সহ ৩৩০ জনের নাবিকের দল। অত্যাধুনিক এই জাহাজ সজ্জিত অল্প ও মাঝির দূরত্বে আক্রমণ চালানোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি সমুদ্রে টর্পেডো লঞ্চারের পাশাপাশি বিমান ধ্বংসকারী মিসাইলে। প্রযুক্তিগত দক্ষতার দিক থেকে শত্রুকে খুঁজে নিকেশ করায় এই জাহাজের জুড়িমেলা ভার। কলকাতার গার্ডেন রিচে তৈরি হয় ‘আইএনএস ব্রহ্মপুত্র’। ১২৫ মিটার দীর্ঘ যুদ্ধজাহাজটির ওজন ৫ হাজার ৩০০ টন। গতিবেগ ঘণ্টায় ২৭ নটিক্যাল মাইলের বেশি। এরআগে ইউরোপ, আফ্রিকা উপকূল এবং ভূমধ্যসাগরে একাধিক রুদ্ধশ্বাস অভিযানে নৌবাহিনীর সঙ্গী থেকেছে ব্রহ্মপুত্র (INS Brahmaputra)। তবে এদিনের দুর্ঘটনায় আরও একটি যুদ্ধজাহাজ হারাল ভারতীয় নৌবাহিনী।