নিউজ ডেস্ক: নামেই ফ্যাশন ইনস্টিটিউট, কিন্তু তার আড়ালেই হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তরিত করার জন্য চলছে ব্রেনওয়াশ। সম্প্রতি এই অভিযোগে নাম জোড়াল উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মোরাদাবাদের ল্যাকমে একাডেমি নামে এক ফ্যাশন ইনস্টিটিউটের। মূলত ওই ইনস্টিটিউট পরিচালনাকারী রক্ষন্দা খানের (Rakshanda Khan) বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। গত ২২ জুলাই দুই হিন্দু ছাত্রী তানিয়া চৌধুরী এবং স্বাতি পাল মিলে জেলা কালেক্টর অনুজ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করে ইনস্টিটিউট পরিচালনাকারী রক্ষন্দা খানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ জানিয়েছেন বলে খবর।
অভিযোগকারীদের অভিযোগ, স্বপ্না ওরফে রক্ষন্দা খান মুসলিম ছেলেদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার জন্য তাদের ওপর রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করছেন। শিক্ষার্থীরা আরও জানিয়েছে যে, রক্ষন্দা খান বলেছেন, ”মুসলিম ছেলেদের বিয়ে করতে কোনো সমস্যা নেই। আমিও আগে হিন্দু ছিলাম। ১৭ বছর আগে শাহনওয়াজ খান নামে একজন মুসলিম ব্যক্তিকে বিয়ে করি। সেসময় আমি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম হয়েছিলাম এবং বর্তমানে মুসলিম পরিবারে খুব সুখী।”
জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) কাঁথ রোডে অবস্থিত ল্যাকমে একাডেমি নামে ওই ফ্যাশন ইনস্টিটিউটে মূলত মেকআপ, চুল এবং ত্বকের পরিচর্যা শেখায় রক্ষন্দা। এর জন্য বিভিন্ন কোর্স রয়েছে তাঁর একাডেমিতে। একাডেমির প্রায় সব ছেলেই মুসলিম এবং বেশিরভাগ মেয়েই হিন্দু। অভিযোগ রক্ষন্দা খান (Rakshanda Khan) প্রধানত মুসলিম ছেলে এবং হিন্দু মহিলাদেরই কর্মী হিসাবে নিয়োগ করতেন। এরপর রক্ষন্দা হিন্দু মেয়েদের এই মুসলিম ছেলেদের সাথে বন্ধুত্ব করতে উৎসাহিত করত, যাতে মুসলিম ছেলেদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে হিন্দু মেয়েরা বিয়ের পর হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে।
এ প্রসঙ্গে, তানিয়া চৌধুরীর অভিযোগ, ”ভর্তির সময় আমাদের বলা হয়েছিল যে একাডেমিতে মাংস ও মাছ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, কিন্তু মুসলিম ছেলেরা প্রতিদিন এখানে মাংস ও মাছ নিয়ে আসে এবং সবার সামনে খায়।” অন্যদিকে স্বাতী পাল বলেন, ”অভিযুক্ত রক্ষন্দা খান (Rakshanda Khan) হিন্দু ধর্মের অপব্যবহার করে এবং যে হিন্দু মেয়েরা তাকে মানে না তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এমনকি রক্ষন্দা হিন্দু মেয়েদের টিপ, টিকা, কপালে সিঁদুর এবং গলায় মঙ্গলসূত্র পরতে বাধা দিতেন। কোনো বিবাহিত মেয়ে মঙ্গলসূত্র ও সিঁদুর পরে এলে তাকে ইনস্টিটিউটে ঢুকতে দিত না। কিন্তু, মুসলিম ছাত্র ও মুসলিম প্রশিক্ষকদের একাডেমিতেই নামাজ পড়ার স্বাধীনতা রয়েছে।”
এরপর অভিযোগকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে, মোরাদাবাদ পুলিশ রক্ষন্দা খানের (Rakshanda Khan) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে। অন্যদিকে এই ঘটনার পরেই হিন্দু কর্মীরা রক্ষন্দা খানের কুশপুতুল পুড়িয়ে একাডেমির বাইরে হনুমান চালিসা পাঠ করেন এবং অভিযুক্ত রক্ষন্দা খানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি তাঁর প্রতিষ্ঠানটি সিল করার দাবি জানায়। এছাড়াও, তাঁরা দাবি করেন যে, শিক্ষার্থীরা যেন তাদের ফি ফেরত পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকে।