নিউজ ডেস্ক: হেপাটাইটিস হল এমন একটি রোগ যা লিভারকে সম্পূর্ণ রূপে খারাপ করে দিতে পারে। যেহেতু লিভার শরীরের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, তাই হেপাটাইটিস নামক রোগটি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ আছে, এমনটাই বলছেন চিকিৎসকরা। হেপাটাইটিস সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রতি বছর ২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস (World Hepatitis Day) পালন করা হয়। ২০২৪ সালে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের থিম হল, ‘এটি অ্যাকশনের সময়’।
সাধারণভাবে হেপাটাইটিসের (World Hepatitis Day) বিভিন্ন প্রকার আছে, তা হল- এ, বি, সি, ডি, ই। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হেপাটাইটিস বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে সংক্রামক রোগ (Infectious Disease)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট সামনে এসেছে এবং সেখানে দেখা যাচ্ছে, সারা পৃথিবী জুড়ে প্রায় ৩০ কোটি মানুষই বর্তমানে হেপাটাইটিস বি অথবা সি রোগে আক্রান্ত। একটি রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে, প্রতি বছর ১৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় হেপাটাইটিসের কারণেই। সাধারণভাবে এই রোগে ক্লান্তি দেখা যায়, ঘনঘন প্রস্রাব হয়, ব্যথা, প্রদাহ জনিত সমস্যা দেখা যায়, ওজন হ্রাস পেতে থাকে, জন্ডিস হয়, দুর্বল ভাব লাগে।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, হেপাটাইটিস-এ এর ক্ষেত্রে সাধারণভাবে চিকিৎসার কোনও প্রয়োজন নেই। অন্যদিকে হেপাটাইটিস-বি এর জন্য বেশ কিছু ভ্যাকসিন প্রচলিত রয়েছে। হেপাটাইটিস-সি এর ক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দেওয়া হয় এবং নিয়মিতভাবে চিকিৎসকের কাছে আসা-যাওয়া করতে হয়। হেপাটাইটিস-ডি এর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনও অ্যান্টিভাইরাল (Infectious Disease) চিকিৎসা নেই। অন্যদিকে হেপাটাইটিস-ই সাধারণভাবে আপনা-আপনি চলে যায় বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সালের ডঃ বারুচ স্যামুয়েল ব্লুমবার্গ প্রথম হেপাটাইটিস বি ভাইরাস আবিষ্কার করেন। তিনিই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিন তৈরি করেন, যার জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান। ২৮ জুলাই এই মহান ব্যক্তিত্বের জন্মদিন। আর তাই প্রতি বছর ব্লুমবার্গের অবদানকে স্মরণ করার জন্যই পালন করা হয় বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস।
জেনে নিন কীভাবে নিজেকে সুস্থ রাখবেন?
টিকাদান: হেপাটাইটিস-এ এবং হেপাটাইটিস-বি এই দুটির ভ্যাকসিন পাওয়া যায় বাজারে। তাই এই দুটি ভাইরাসের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য আগে থেকেই টিকাকরণ করিয়ে রাখবেন।
নিরাপদ ইনজেকশন: যে কোনও ইঞ্জেকশন নেওয়ার আগে দেখবেন, সূচ একেবারে নতুন আছে কিনা।
নিরাপদ যৌনতা: যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার আগে অবশ্যই প্রোটেকশন নেবেন।
স্বাস্থ্যকর খাবার এবং জল: যে খাবার এবং জল আপনি গ্রহণ করছেন, নিশ্চিত করুন সেটা পরিচ্ছন্ন কিনা।
হাত পরিষ্কার রাখুন: খাওয়ার আগে এবং টয়লেট ব্যবহার করার পর অবশ্যই হাত ভালো করে ধুতে হবে।
ব্যক্তিগত জিনিস শেয়ার করবেন না: নিজের রেজার, টুথব্রাশ বা নেল কাটার অন্য কাউকে দেবেন না।
সচেতনতা: হেপাটাইটিস কীভাবে ছড়ায় সেই সম্পর্কে সচেতনতা থাকা প্রয়োজন সবার আগে।