নিউজ ডেস্ক: স্কুলের বইতে আমরা প্রত্যেকেই পড়েছি যে সূর্যালোকের (Sunlight) উপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবুজ উদ্ভিদ অক্সিজেন তৈরি করে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। তবে এমন ধারণা যে অকাট্য নয়, তা সম্প্রতি প্রমাণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। অর্থাৎ, সূর্যালোকের উপস্থিতি অক্সিজেন উৎপাদনের (Dark Oxygen) ক্ষেত্রে অপরিহার্য ফ্যাক্টর নয়। অতল সমুদ্র গহ্বরে সূর্যালোকের অভাবেই তৈরি হচ্ছে অক্সিজেন। সম্প্রতি এমনটাই আবিষ্কার করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন যে প্রশান্ত মহাসাগরের একেবারে তলদেশে প্রায় ১৩ হাজার ফুট নীচে, যেখানে সূর্যালোক পৌঁছানোর কোনও সম্ভাবনা নেই, সালোকসংশ্লেষও অসম্ভব, সেখানেই প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন (Dark Oxygen) তৈরি হচ্ছে।
সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাসায়নিক ধাতব বিক্রিয়ার মাধ্যমেই তৈরি হচ্ছে এই অক্সিজেন। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন, ‘ডার্ক অক্সিজেন’ বা ‘অন্ধকার অক্সিজেন’। এ নিয়ে নেচার জিও সায়েন্স জার্নালে এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণাপত্রে দাবি করা হচ্ছে, সালোকসংশ্লেষ ছাড়াও অক্সিজেন (Dark Oxygen) তৈরি হয় এই পৃথিবীতে। আন্তর্জাতিক গবেষকদের দলটি আবিষ্কার করতে পেরেছেন যে এই অক্সিজেনই টিকিয়ে রেখেছে গভীর সমুদ্রের জীবনকে যা সম্পূর্ণ অন্ধকারে বেঁচে রয়েছে।
আজ থেকে ১১ বছর আগে ২০১৩ সালেই প্রশান্ত মহাসাগরে ফিল্ডওয়ার্কে গিয়েছিলেন স্কটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর মেরিন সায়েন্সের বিজ্ঞানী, অ্যান্ড্রু সুইটম্যান। সেসময়, সুইটম্যান এবং তাঁর সহযোগী অন্যান্য বিজ্ঞানীরা ক্লারিওন-ক্লিপারটন জোনে সমুদ্র-তলের ইকোসিস্টেমগুলি (Sunlight) নিয়ে গবেষণা করেন। ওই গবেষণার সময়ই তাঁরা সেখানে ‘অন্ধকার অক্সিজেন’-এর (Dark Oxygen) সন্ধান পেয়েছিলেন বলে জানা যায়। এনিয়ে সুইটম্যান বলেন, “এখন আমরা জানি, গভীর সমুদ্রেও অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। যেখানে কোনও আলো নেই। আমি মনে করি, বায়বীয় জীবন কোথায় শুরু হতে পারে, আমাদের এই প্রশ্নগুলো পুনরালোচনা করা দরকার।”