নিউজ ডেস্ক: কৌশিকী অমাবস্যায় (Kaushiki Amavasya 2024) সেজে উঠেছে বোলপুরের কঙ্কালীতলা। এবার সোমবার ভোরে এই তিথি শুরু হয়ে পরের দিন সকাল পর্যন্ত থাকছে। আগের দিন যেহেতু ছু’টি তাই রবিবার থেকেই ভক্তের ঢল নামেছে কঙ্কালীতলায়। মহাপীঠ তারাপীঠের মতোই বোলপুরের কঙ্কালীতলা সতীপীঠ। অমাবস্যার বিশেষ তিথি কৌশিকী অমাবস্যাকে ঘিরে সেজে উঠেছে কঙ্কালীতলা।
কথিত আছে, কঙ্কালীতলায় সতীর কাঁক অর্থাত্ কোমর পড়েছিল। তখন থেকেই এই তীর্থের নাম কঙ্কালীতলা।
এই পুজোর সঙ্গে জড়িত আছে নানা পৌরাণিক কাহিনি। কৌশিকী অমাবস্যার (Kaushiki Amavasya 2024) পবিত্র লগ্নে তারাপীঠের মন্দিরের ন্যায় কঙ্কালী মন্দিরেও বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। কথিত আছে সাধক বামাক্ষ্যাপা, ১২৭৪ বঙ্গাব্দে কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল বৃক্ষের তলায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। মা তাঁকে নিরাশা করেনি। ধ্যানমগ্ন বামাক্ষ্যাপা এদিন তারা মায়ের আবির্ভাব পান। এছাড়াও শোনা যায়, এই তিথিতে কৌশিকী রূপে মা তারা বিশেষ সন্ধিক্ষণে, শুম্ভ- নিশুম্ভ নামক অসুরদের দমন করেছিলেন। সেই নাম থেকেই ‘কৌশিকী অমাবস্যা’ নামটি এসেছে। আবার আজকের এই দিনে দশ মহাবিদ্যার দ্বিতীয়া স্তরের অন্যতম দেবী ‘তারা’ মর্ত ধামে আবির্ভূত হন৷
অন্যদিকে কৌশিকী অমাবস্যা (Kaushiki Amavasya 2024) তিথি উপলক্ষ্যে সেজে উঠছে তারাপীঠ মন্দিরও।
তারাপীঠে সব থেকে বড় উৎসব কৌশিকী অমাবস্যা। এই উৎসব মানেই লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম। বিশেষ এই তিথিতে পুণ্যলাভের আশায় ফিবছর লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় জমান। যা সামাল দিতে কালঘাম ছোটে পুলিসের পাশাপাশি মন্দির কমিটির। এবার আরজিকর কাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতেও মায়ের কাছে পুজো দেন অনেক ভক্ত।
সোমবার সন্ধ্যা হতেই মন্দিরের চেহারা পাল্টে যাবে। নানা রঙের আলোর ছটা গর্ভগৃহের দেওয়ালে ফেলা হবে। সেই সঙ্গে গোটা মন্দির চত্বর ফুল ও আলোকসজ্জায় সাজিয়ে তোলা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে তারাপীঠের জনবহুল মোড়গুলিতে ওয়াচ টাওয়ারের পাশাপাশি জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হচ্ছে। যাতে ভিড়ে যাঁরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন না, তাঁরা এই স্ক্রিনের মাধ্যমে দেবীর পুজো ও আরতি দর্শন করতে পারবেন। সেই সঙ্গে পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে ২৭০০ পুলিশ কর্মী। বিশেষ নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে শ্মশান চত্বরকে।
এদিকে সতীপীঠ বোলপুরের কঙ্কালীতলাতেও এবার ভিড় বাড়বে বলে আশাবাদী মন্দির কমিটি। তাই তাদের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তার সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আগত ভক্ত ও সাধুসন্তদের সুবিধার্থে প্যান্ডেল খাটানো হয়েছে। একাধিক অস্থায়ী হোমযজ্ঞ করার জায়গায় ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে গোটা মন্দির চত্বরজুড়ে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ।