নিউজ ডেস্ক: সোমবার নির্ঘুম রাত কাটানোর পরও মঙ্গলবার সকালে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন আর জি করের জুনিয়র চিকিৎসকরা। লালবাজারের অদূরে ফিয়ার্স লেনে অবস্থান বিক্ষোভে অনড় তাঁরা। রাস্তায় বসে চলছে ধরনা। দাবি একটাই, কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে হবে। নচেৎ ওই পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে। আন্দোলনকারীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে যতক্ষণ না পর্যন্ত তাঁদের এই দাবি পূরণ করা হচ্ছে, তাঁরা এক চুলও নড়বেন না ধর্না থেকে।
আর জি কর হাসপাতালে (RG Kar Incident) কর্তব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের পর কেটে গিয়েছে তিন সপ্তাহ। তদন্তভার নিয়েছে সিবিআই। কিন্তু এখনও তেমন অগ্রগতি নেই তদন্তে। যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে জুনিয়র চিকিৎসকদের। তাঁদেরই সহকর্মীর এমন এক মর্মান্তিক পরিণতির নেপথ্যে কারা? এখনও কেন তা খুঁজে বের করতে পারল না সিবিআই? এই প্রশ্নের জবাব না পেয়ে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে তাঁদের। এরই মধ্যে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে তাঁদের ভুরি ভুরি অভিযোগ। তাই তাঁর পদত্যাগ চান আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। আর তাই এই লালবাজার অভিযান।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ভোরে সকলকে এড়িয়ে লালবাজার ছেড়ে বেরিয়ে যান কলকাতার পুলিশ কমিশনার। অন্যদিকে ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের তরফে আন্দোলনকারীদের প্রস্তাব দেওয়া হয় যে লালবাজারে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর, তবে এই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের একটাই দাবি, পুলিশ কমিশনারকে পদত্যাগ করতে হবে।
অন্যদিকে সোমবারই জুনিয়র ডাক্তারদের লালবাজার আন্দোলনকে (RG Kar Incident) সমর্থন করে বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবি যথাযথ বলেই জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবি যথাযথ! সৎ সাহস থাকলে উনি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে দেখা করতে পারতেন। জুনিয়র ডাক্তাররা নিরস্ত্র অবস্থায় আন্দোলন করতে গিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে একবার হলেও দেখা করা উচিত ছিল পুলিশ কমিশনারের। কিন্তু, সেটা না করে লোহার ব্যারিকেড দিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের আটকানোর চেষ্টা করলেন! এটা অমানবিক ছাড়া আর কিছুই নয়।’’
উল্লেখ্য, সোমবার ডাক্তারদের লালবাজার ঘেরাও অভিযানে সামিল হয়েছিলেন অনেক অভিভাবকই। তাঁরা সাফ জানিয়েছেন, যে নারকীয় ও পাশবিক ঘটনা ঘটেছে সরকারি হাসপাতালে তার পর তাঁরা তাঁদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বিগ্ন। তাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই অভিযানে নেমেছেন তাঁরা। তবে এবার জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে তাঁদের সঙ্গেই রাত জাগবেন নির্যাতিতার বাবা-মা।