নিউজ ডেস্ক: মঙ্গলবার বিধানসভায় পেশ হল ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল’ (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী বিল, ২০২৪)। নানা বিতর্কের পর অবশেষে শাসক ও বিরোধীদের সম্মতিতে এই বিল পাস হয় বিধানসভায়। কেন্দ্রের ন্যায় সংহিতায় সংশোধন ঘটিয়ে ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং নারী ও শিশুদের উপর যৌন অপরাধের ক্ষেত্রে এই প্রথম পৃথক বিল পাস করল দেশের কোনও রাজ্য। তবে বিলটি বিধানসভায় পাস হলেও, আইন হিসেবে সেটি কার্যকর হতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর স্বাক্ষর প্রয়োজন। তাঁদের অনুমোদন পেলে তবেই আইনে পরিণত হবে ‘দ্য অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪’ (Aparajita Bill 2024)।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, নতুন এই বিলের মাধ্যমে বর্ধিত শাস্তি, দ্রুত তদন্ত এবং দ্রুত ন্যায় বিচার-এর মতো বিষয়গুলিকে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে। নারী নির্যাতন কমাতে ‘অপরিজিতা টাস্ক ফোর্স’ নামে বিশেষ পুলিশ বাহিনী গঠন করা হবে বলেও তিনি জানান।
এরপর আজকের এই দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেন মমতা। এই বিলে ধর্ষণ এবং ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। অ্যাসিড হামলার ক্ষেত্রেও মৃত্যুদণ্ডের বিধান এনেছে রাজ্য। বিল পেশের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”রাজ্য চাইলে আইন আনতেই পারে। সংবিধান সেই অধিকার আমাদের দিয়েছে।”
একইসঙ্গে বিল পেশের সময় মুখ্যমন্ত্রী নজরুল ইসলামের কবিতা উদ্ধৃত করে বলেন, ”বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি, চির কল্যাণকর/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী/ অর্ধেক তার নর।” এই বিল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ”এই বিলে (Aparajita Bill 2024) আমরা ধর্ষণে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার কথা বলেছি। এটা সমাজের একটা অভিশাপ। সমাজ সংস্কার করার প্রয়োজন রয়েছে।”
উল্লেখ্য, আর জি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্যের জন্য পৃথক ধর্ষণবিরোধী বিল (Aparajita Bill 2024) আনার ঘোষণা আগেই করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো, মঙ্গলবার বিধানসভায় ‘অপরাজিতা বিল’ পাস হল।
অপরাজিতা বিলকে সমর্থন করেছে বিজেপিও। এই বিল সমর্থন করে এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ”আমি রেজাল্ট দেখতে চাই।” এর উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”বিরোধী দলনেতাকে বলুন বিলে রাজ্যপালকে সই করতে। তার পরেই দেখবেন রুলস হয়ে গিয়েছে।”