নিউজ ডেস্ক: উৎসশ্রী প্রকল্পে বদলি নিয়ে চলে গিয়েছেন অধিকাংশ শিক্ষিকা। সেই ফাঁকা জায়গায় মেলেনি কোনও শিক্ষিকা। স্বল্প সংখ্যক শিক্ষিকা দিয়ে ক্লাস চালাতে হিমশিম খেতে হয় স্কুলকর্তৃপক্ষকে। এমন পরিস্থিতিতেই মুশকিল আসান করেছেন মনসাচরণ। পরিস্থিতি সামল দিতে তাই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এই কর্মীকেই শিক্ষকের ভূমিকা নিতে হয়েছে।
কীর্ণাহারের জামনা-ধ্রুববাটি বসন্তকুমারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে আজ, বৃহস্পতিবার শিক্ষক দিবসের (Teacher’s Day Special) অনুষ্ঠানে তাই শিক্ষকদের মতোই সংবর্ধনা দেওয়া হবে স্কুলের পিওন মনসাচরণ দাসকে।
২০১২ সালে ওই স্কুলে যোগ দেন মনসাচরণ। চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হলেও তিনি বিএ পাশ। অঙ্কে ভাল দখল রয়েছে। স্কুলে অঙ্কের একমাত্র শিক্ষিকা রয়েছেন অর্পিতা ঘোষকে বিজ্ঞান বিভাগের অন্য ক্লাসও নিতে হয়। সব ক্লাসে অঙ্ক করানো তাঁর পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই নিজের কাজের পাশাপাশি ২০১৯ সাল থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত ৩টি করে অঙ্কের ক্লাস নিচ্ছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী মনসাচরণই।
জেলা শিক্ষা দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা ৩৩৫ জন। ২০১৯ সাল থেকে উৎসশ্রী প্রকল্পে বদলি নিতে নিতে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা-সহ রয়েছেন মাত্র ৪ জন শিক্ষিকা। চার শিক্ষিকার মধ্যে একজনকে প্রশাসনিক সংযোগ রক্ষা করতে হয়। রয়েছে চিকিৎসা, মাতৃত্বকালীন-সহ অন্য ছুটিও। অথচ দৈনিক গড়ে ৩০টি করে ক্লাস হয়। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে শিক্ষকের ভূমিকা (Teacher’s Day Special) নিজের কাঁধে নিয়েছেন মনসাচরণ।
এ প্রসঙ্গে মনসাচরণ নিজে বলছেন, ‘‘ছাত্রাবস্থা থেকেই অঙ্ক আমার প্রিয় বিষয় ছিল। যখন দেখলাম শিক্ষিকা অভাবে ছাত্রীদের ক্লাস হচ্ছে না তখন নিজের কাজ সামলে ক্লাস নেওয়ার দায়িত্বটা কাঁধে তুলে নিই। যত দিন শিক্ষিকার সমস্যা না মিটবে ততদিন ক্লাস চালিয়ে যাব। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন তাতে আমি অনুপ্রাণিত।’’ মনসাচরণের পড়ানোয় ছাত্রীরাও খুশি। সপ্তম শ্রেণির রাজন্যা ঘোষ, মনীষা ঘোষ, ষষ্ঠ শ্রেণির প্রত্যুষা ঘোষ, শর্মিষ্ঠা মণ্ডলরা বলেন, ‘‘উনি খুব সহজ সরল ভাবে অঙ্ক বুঝিয়ে দেন।’’ খুশি স্কুলের অন্যান্য কর্মী এবং স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্যরাও।