নিউজ ডেস্ক: দু’দিন আগেই নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, চিকিৎসকরা নাকি পুলিশের চিকিৎসা করছে না। টালা থানার প্রাক্তন ওসি-কে নিয়েই কথাটা বলেছিলেন মমতা। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য দাবি করেছিল, জুনিয়র চিকিৎসকদের (RG Kar Protest) জন্যই রাজ্যে গত ১ মাসে ২৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এই সবের মাঝেই গতকাল গভীর রাতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে দেখা গেল এক মানবিক দৃশ্য। এমনিতেই এই আন্দোলনের আবহে ডাক্তার ও পুলিশ মুখোমুখি। কোনও সংঘর্ষ না হলেও ডাক্তারদের গলায় প্রতিনিয়ত শোনা গিয়েছে পুলিশ বিরোধী স্লোগান। এই সবের মাঝেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়া এক কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে নাকি সুস্থ করে তোলেন আন্দোলনকারীরা।
এ প্রসঙ্গে ডাঃ বিপ্রেশ চক্রবর্তীর একটি লেখা ভাইরাল হয়েছে৷ তিনি জানিয়েছেন যে গতকাল রাত ১২.৩০ টায় স্বাস্থ্য ভবনে বিক্ষোভস্থলে (RG Kar Protest) বিধাননগর পুলিশের একজন মহিলা পুলিশ কর্মীর হাঁপানি তীব্রভাবে বৃদ্ধি পায় এবং মারাত্মকভাবে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে যায়। প্রতিবাদী ডাক্তারা অবিলম্বে তাঁর পাশে উপস্থিত হন, তাঁর পরীক্ষা করান এবং তাঁর চিকিৎসা শুরু করেন। পুলিশকর্মী কাছে কোন ইনহেলার ছিল না। চিকিৎসকরাই তাঁর জন্য ইনহেলারের ব্যবস্থা করেন৷ ধীরে ধীরে তিনি একটু সুস্থ বোধ করতে শুরু করেন। অ্যাম্বুলেন্সেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ তাঁকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এভাবে এগিয়ে এসে সাহায্য করার জন্য সেখানে উপস্থিত সিনিয়র পুলিশ অফিসাররা জুনিয়ার ডাক্তারদের ধন্যবাদ জানান। ফলে আরও একবার আন্দোলনরত জুনিয়ার ডাক্তাররা বুঝিয়ে দেন যে নিজেদের কর্তব্য কোন গাফিলতি তাঁরা করবেন না৷
এসএসকেএম হাসপাতালের ডিএম রেসিডেন্ট, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডাঃ বিপ্রেশ চক্রবর্তীর এই লেখা ছড়িয়ে পড়তে থাকে৷ রাজ্য সরকার ও জুনিয়ার ডাক্তারদের মধ্যে এই মুহূর্তে যে টানাপোড়েন চলছে, সেই সময় দাঁড়িয়ে এই পোস্টটি ভাইরাল হয়৷
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়ার ডাক্তারদের ধর্না অবস্থান (RG Kar Protest) বুধবার রাতেই তিরিশ ঘণ্টা পার করে ফেলেছে৷ বরং যত সময় যাচ্ছে, জুনিয়র চিকিৎসকদের এই ধর্না অবস্থানে যোগ দিচ্ছেন অন্যান্য পেশার সঙ্গে যুক্ত বহু বিশিষ্ট জন এবং সাধারণ মানুষ৷ বুধবার সন্ধে বেলা প্রথমে নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব, ডিজি এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর করা সাংবাদিক বৈঠক এবং তার জবাবে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের জবাবের পরই স্পষ্ট হয়ে যায়, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতিকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া জটিলতা সহজে কাটবার নয়৷ এর পরই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্না অভিযান চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা৷