নিউজ ডেস্ক: ভয়াবহ পরিস্থিতি ভারতের পড়শি দেশ নেপালে। বন্যার (Nepal Flood) কারণে একাধিক জায়গায় ধস এবং তার জেরে প্রচুর মানুষের মৃত্যু ঘটেছে ইতিমধ্যেই। নেপাল সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত কম-বেশি ৪ হাজার জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৭০-এর গণ্ডি। মৃত্যু আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। রাজধানী কাঠমান্ডুর কাছে বাগমতি নদী এবং তার উপনদীগুলির জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। কোথাও কোথাও নদীর জল দু’কূল ছাপিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। তাতে ভেসে গিয়েছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি এবং অনেক গাড়ি।
বন্যার কারণ (Nepal Flood) ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে নেপাল জুড়ে। মূলত পূর্ব এবং মধ্য নেপালের বিস্তীর্ণ অঞ্চল কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। ৩২২টি বাড়ি থেকে শুরু করে ১৬টি ব্রিজ, ন্যাশেনাল হাইওয়ে সহ বহু রাস্তা ধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত। দেশের বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, নেপাল সেনা, পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী যৌথভাবে কাজ করছে দিন-রাত এক করে। জায়গায় জায়গায় রেস্কিউ অপারেশন চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১৬২ জনকে এয়ারলিফট করেও উদ্ধার করা হয়েছে। একইসঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে তিন হাজারের বেশি নিরাপত্তাকর্মীকে। হেলিকপ্টার এবং মোটরবোটের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন এলাকায় পৌঁছে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন তাঁরা। পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণসামগ্রীও। কেউ কেউ বলছেন, নেপাল যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা গত ৪০-৪৫ বছরে দেখা যায়নি। পরিস্থিতি সামাল দিতে পথে নেমেছে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। বিভিন্ন এলাকায় তাঁরা খাদ্যসামগ্রী থেকে শুরু করে ওষুধপত্র বিতরণ করছে।
উল্লেখ্য, এই বৃষ্টি এবং বন্যার (Nepal Flood) কারণে শনিবার নেপালের বিভিন্ন বিমানবন্দর থেকে ১৫০টি ঘরোয়া বিমান বাতিল হয়েছিল। তবে রবিবার সকাল থেকে বিমান পরিষেবা আবার স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টি এবং মুহূর্মুহু ধসের কারণে রাজধানী কাঠমান্ডু নেপালের বাকি অংশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিপর্যয়ে আটকে পড়েছেন অনেক পর্যটকও।
সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র ঋষিরাম তিওয়ারি বলেছেন, ‘‘কাঠমান্ডুর সঙ্গে যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করতে আমাদের উদ্ধারকারীরা কঠোর পরিশ্রম করছেন। এখনও পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মানুষকে আমরা উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে পেরেছি। ধসের পর ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে হাইওয়ে মেরামত করার কাজও শুরু হয়েছে।’’