নিউজ ডেস্ক: স্কুল চলাকালীন কেউ মোবাইলে মগ্ন। কেউ আবার চেয়ারে বসে ভাতঘুমে আচ্ছন্ন। কেউ আবার ক্লাস শুরুর আড়াই ঘণ্টা পরে স্কুলে এসেছেন। আচমকা স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে এমনই ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলার প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের কর্তারা। আর এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই ঝাড়গ্রাম জেলার প্রাথমিক স্কুলের ৩২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে শোকজ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রামের (Jhargram) বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান জয়দীপ হোতা বলেন, ”স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাজের গাফিলতির জন্য এখনও পর্যন্ত ৩২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে শোকজ করা হয়েছে। আজ, সোমবার তাঁদের সশরীরে এসে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়া গেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আসলে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কমিশনার সমস্ত জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শকদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, বিদ্যাসাগরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে স্কুলগুলিতে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ পরিদর্শন করতে হবে। সেই অনুযায়ী স্কুল পরিদর্শনে বেড়িয়েছিলেন ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলার প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের কর্তারা। কিন্তু সেখানে গিয়েই এমনই ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন তারা।
এদিন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ঘড়ির কাঁটায় দুপুর আড়াইটে। কিন্তু বিদ্যালয় তালা বন্ধ। গ্রামে খোঁজ নিয়ে শিক্ষা দপ্তরের কর্তারা জানতে পারেন, মাষ্টারমশাই প্রতিদিন দুপুর দেড়টায় বাচ্চাদের স্কুলের মিড-ডে মিল খাইয়ে দুপুর দুটোয় স্কুল ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। প্রত্যন্ত গ্রামের শিক্ষকরা ‘রোটেশনে’ স্কুলে আসেন বলে তাঁদের সামনে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা। এরই মাঝে জেলার বেশ কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিচেন গার্ডেন, বিভিন্ন ছবি দিয়ে স্কুলের দেওয়াল রং করার মতো প্রমান পেয়েছেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে জেলা (Jhargram) প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌমেনচন্দ্র লাহা বলেন, ”সপ্তাহব্যাপী বিশেষ পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেশ কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতির আমরা প্রমাণ পেয়েছি।” ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান জয়দীপ হোতা, ঝাড়গ্রাম জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌমেনচন্দ্র লাহা এবং ১৮ জন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকরা মিলে ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শন করার সময়ে এই ঘটনা সামনে উঠে আসে। এই সমস্ত ঘটনাকে সামনে রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও এ বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তরফে এখনও কোনোও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।