নিউজ ডেস্ক: প্রয়াত হলেন শিল্পপতি রতন টাটা। বয়সজনিত সমস্যা নিয়ে মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। বুধবার রাতে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। বুধবার সন্ধ থেকেই জল্পনা শুরু হয়, তাঁর সঙ্কটজনক পরিস্থিতি নিয়ে। তবে একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছিল, বর্ষীয়ান শিল্পপতি গুরুতর অসুস্থ। রয়েছেন আইসিইউতে। বুধবার রাতে জানা যায়, প্রয়াত বর্ষীয়ান শিল্পপতি।
জানা গিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর হাসপাতালে ভর্তি হন টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান। তারপর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল। রতন টাটা অবশ্য় নিজেই জানিয়েছিলেন, রেগুলার চেক আপের জন্য তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আমার স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক জল্পনা ছড়াচ্ছে। ওইসব জল্পনার কোনও ভিত্তি নেই’। তবে বুধবার থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল।বয়সের ভারে চেহারা যত ন্যুব্জ হচ্ছিল, রতন টাটাকে নিয়ে ততই দীর্ঘশ্বাস ফেলছিলেন অনুরাগীরা। তাই সম্প্রতি তাঁর অসুস্থতার খবর সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়।
টাটা গোষ্ঠীর বয়স একশোরও বেশি। এই গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রতনের প্রপিতামহ। ১৯৯১ সালে টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হন তিনি। তখন মূলত অটোমোবাইল এবং ইস্পাতশিল্প ক্ষেত্রে ছড়িয়ে ছিল টাটা গোষ্ঠীর ব্যবসা। ১৯৯৬ সালে টাটা টেলিসার্ভিস শুরু করেন প্রবীণ শিল্পপতি। ২০০২ সালে শুরু করেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস’। ২০১২ সালে টাটা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার সরাসরি দায়িত্ব থেকে সরে সাম্মানিক পদে বসেন রতন।
২০০০ সালে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান পান রতন টাটা। ২০০৮ সালে পান ‘পদ্ম বিভূষণ সম্মান’। মহারাষ্ট্র, অসম সরকারও তাঁকে সম্মান প্রদান করে। ইউনিভার্সিটি অফ কেমব্রিজ, লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্স, আইআইটি বম্বে, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, রাজা তৃতীয় চার্লসের থেকেও বিশেষ ভাবে সম্মানিত হন। রতন টাটা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হননি। তবে ২০১১ সালে একটি সাক্ষাৎকারে জীবনে প্রেম এসেছিল বলে স্বীকার করে নেন। চার-চারবার বিয়ের পিঁড়িতে বসার উপক্রম হলেও, শেষ পর্যন্ত কোনও সম্পর্ক পরিণতি পায়নি বলে জানান। তবে বৈবাহিক সম্পর্কে না জড়ালেও, কোটি কোটি মানুষের ভালবাসা, আশীর্বাদ বরাবর পাথেয় হয়েছে তাঁর। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা দেশে।