নিউজ ডেস্ক: বাংলার পর জাতীয় স্তরেও বিজয়রথ ছোটাচ্ছে নন্দিতা-শিবপ্রসাদের ‘বহুরূপী’ (Bohurupi)। বিশেষ করে অভিনেতা শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ে মুগ্ধ প্রবাসী বাংলা সিনেদর্শকরা। তাই তো, প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরিয়েও ‘ছ্যাঁচড়াপুরের বিক্রমে’র ঘোর কিছুতেই যেন কাটতে চাইছে না তাঁদের। এবছর পুজোর সময় পঞ্চমীর দিন মুক্তি পেয়েছে ‘বহুরূপী’। সাত দিনেই ব্যবসার যে অঙ্ক ছুঁয়েছে, তাতে ঝকঝকে মার্কশিট নন্দিতা-শিবপ্রসাদের হাতে। আর শনিবার ১৯ অক্টোবর জাতীয় স্তরে রিলিজ করেছে এই সিনেমা। বাংলার পর সেখানেও হই হই করে হাউসফুল শো চলছে। মুম্বই, পুণে, দিল্লি থেকে বেঙ্গালুরুর মতো মেট্রো সিটিগুলির প্রেক্ষাগৃহেও বাংলার মাটির স্বাদ নিতে দলে দলে হল ভরাচ্ছেন দর্শকরা।
এ প্রসঙ্গে পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানালেন, “দুর্গাপুজোর পর লক্ষ্মীপুজোতেও ‘বহুরূপী’ (Bohurupi) ট্রেন্ডিং গিয়েছে। তার প্রমাণ বুক মাই শোয়ে টিকিট বুকিংয়ের সংখ্যা। এমনকী লক্ষ্মীপুজোর দিনও স্টার, অশোকা সব প্রেক্ষাগৃহে হাউসফুল শো হয়েছে। এবং সবথেকে যেটা ভালো বিষয় সেটা হল, মানুষ একবার ‘বহুরূপী’ দেখে সদলবলে প্রেক্ষাগৃহে ভিড় জমাচ্ছেন রিপিট ওয়াচের জন্য। হল ভিসিট করতে গিয়েও দেখেছি মানুষ আমার বলা সংলার রিপিট করছেন। এগুলোই তো পরমপ্রাপ্তি।”
১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়পুরে পর পর ঘটে যাওয়া ব্যাঙ্ক ডাকাতির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে বহুরূপীর প্লট। ‘বহুরূপী’ (Bohurupi) আসলে একটি নির্ভেজাল ‘থ্রিলার’ ছবি। মূলত পুলিশ এবং অপরাধীর পরস্পরের বিরুদ্ধে শানিত বুদ্ধির দাবা খেলা। কিন্তু সেই কাহিনির মধ্যেই চিত্রনাট্যের মাধ্যমে বুনে দেওয়া হয়েছে মানবিক কিছু সম্পর্ক, পারিবারিক টানাপড়েন, অথৈ প্রেম, সাহসিকতা, রোমাঞ্চ, রক্ত গরম করা সংলাপ, এবং ভীষণ রকমের বাঙালি ‘সেন্টিমেন্ট’। অথচ সারা ছবিতে এক টুকরোও অপভাষার প্রয়োগ নেই কোথাও। মূলত চোর-পুলিশ খেলার মন্ত্রণার উপর ছবির ভাবনা প্রতিষ্ঠিত। ‘ব্যাঙ্ক ডাকাত’ শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তাঁকে ধরতে মরিয়া ‘সুপারকপ’ আবির চট্টোপাধ্যায়। দুই তারকার সম্মুখ সমরের গল্প দেখা যাচ্ছে সিনেমা হলে। ছবিতে আবিরের নায়িকা ঋতাভরী চক্রবর্তী। আর কৌশানি মুখোপাধ্যায় রয়েছেন শিবপ্রসাদের বিপরীতে।
বহুরূপী’(Bohurupi) তে পুলিশ ও ডাকাতের যে-দাম্পত্য সমান্তরাল, তা বেশ আগ্রহব্যঞ্জক। একদিকে রুচিশীল ও সমস্যাজর্জর, অথচ উপরিতলে নিরাপদ এক বৈবাহিক জীবনের আলাপ, অন্যদিকে সারল্যের মধ্যেও উদ্দামতা ও অনিশ্চয়তার প্রেম ও মিলনের সরগম- যেন আশ্চর্য এক বৈপরীত্য ও সেতুবন্ধনকে প্রতিষ্ঠা দিয়ে চলে। এই রকম ঘটনা নিয়েও যে বাংলায় এমন পরিশীলিত ভাষ্যে চিত্রনাট্য লেখা যায়, এটি একটি অনুধাবনীয় বিষয়। অর্থাৎ, এই বছর পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে নির্দ্বিধায় বসে দেখার মতো একটি বাংলা ছবি ‘বহুরূপী’।