নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপুজোর পর এবার আলোর উৎসব দিওয়ালি বা দীপাবলি আসতে চলেছে খুব শীঘ্রই। সারা ভারতে দীপাবলি উৎসব চলে ৫ দিন ধরে। ধনতেরস (Dhanteras 2024) থেকেই শুরু হয়ে যায় এই আলোর উৎসব। যা শেষ হয় ভাইফোঁয়ায়। প্রতি বছর কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে ধনতেরস উৎসব পালিত হয় দেশজুড়ে।
ক্যালেন্ডার বলছে এবছর ২৯ অক্টোবর ধনতেরাস (Dhanteras 2024)। মাত্র ২ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের শুভ যোগ! কুবেরের ধন মিলবে, মা লক্ষ্মীর কৃপায় ঘুরবে ভাগ্যের চাকা, এই বিশ্বাসে কেনাকাটায় মেতে উঠবেন সকলেই। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর সোয়া একটা পর্যন্ত ধনতেরসের শুভ মুহুরৎ। ধনতেরসের দিনে তিন দেবদেবী– আয়ুর্বেদিক ওষুধের জনক ধন্বন্তরি, লক্ষ্মী এবং কুবেরের পুজো করা হয়। এই উৎসবের পরদিন, দীপাবলি বা নরক চতুর্দশী পালিত হয়। শাস্ত্র অনুসারে, ধন্বন্তরীর আরাধনা করলে স্বাস্থ্য ভাল থাকে।
ধনতেরাস (Dhanteras 2024) বা ধন ত্রয়োদশী বলে পরিচিত এই দিনটিতে সৌভাগ্য অর্জনের জন্য সোনা-রুপো, ধাতুর জিনিস কেনার চল রয়েছে। কথিত রাজা হিমের ষোল বছর বয়সী পুত্রের জীবনে একটি অভিশাপ ছিল। বিয়ের চার দিনের মাথায় সাপের কামড়ে তাঁর অকালমৃত্যু হবে। তাই বিয়ের পরে ওই চতুর্থ রাতে নববধূ স্বামীকে ঘুমোতে দেননি। নানা রকম কৌশলে তাঁকে জাগিয়ে রাখেন। শোওয়ার ঘরের বাইরে প্রচুর ধন সম্পদ, সোনা-রুপোর গয়না, বাসন সাজিয়ে রাখেন তিনি। ঘরেও সব জায়াগায় প্রদীপ জ্বালিয়ে দেন। যাতে সাপ কোনও ভাবেই তাঁদের ঘরে ঢুকতে না পারে। স্বামীকে জাগিয়ে রাখতে সারারাত গল্প আর গানও শোনান তিনি। মৃত্যুর দেবতা যম তাঁর স্বামীকে নিয়ে যেতে আসেন, ঘরের দরজায় অত গয়নার জৌলুস এবং প্রদীপের আলোয় তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে যায়। রাজপুত্রের শোওয়ার ঘর পর্যন্ত না গিয়ে ওই গয়নার উপর শুয়ে রানির গান আর গল্প শুনতে শুনতে বিভোর হয়ে পড়েন যম। পরে দিকভ্রান্ত হয়ে নিজের আস্তানায় ফিরে যান যমদেব। রক্ষা পান রাজকুমার। এই ঘটনার পরের দিন সেই আনন্দে সোনা-রুপো এবং আরও বিভিন্ন ধাতু কিনে উৎসব পালন করা শুরু হয় রাজপরিবারে। সেই থেকেই শুরু ধনতেরাস উৎসবের।
তাই গয়না হোক বা মুদ্রা, এই দিনে কিছু না কিছু কেনার রীতি রয়েছে। তাই গয়নার দোকানগুলিতেও উপচে পড়ে ভিড়। হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, এই দিনে কেনা সোনা বা রুপো দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয়। তাই এই দিনে সোনা বা রুপো কিনলে তা জীবনে সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসে।