নিউজ ডেস্ক: বৃহস্পতিবার রাতে ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মাঝে আছড়ে পড়ে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। দানার প্রভাব ব্যাপক পড়ার আশঙ্কা পূর্ব মেদিনীপুরে শুরু থেকেই ছিল। খোদ আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফেও সেই আশঙ্কাই করা হয়েছিল। গতকাল রাতে পূর্ব মেদিনীপুর লাগোয়া ওড়িশা সমুদ্র উপকূলে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় দানা। স্বাভাবিকভাবেই এই রাজ্যের উপকূলের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে তার প্রভাব ব্যাপক পড়েছে। মন্দারমণির পাশাপাশি দিঘা, শংকরপুর, তাজপুরের সমুদ্রেও ব্যাপক জলোচ্ছ্বাসে প্রবল আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
জলোচ্ছ্বাসে মন্দারমণির নিচু জমিতে নোনা জল ঢুকে গিয়েছে। পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরও দানার তাণ্ডবে তছনছ হয়েছে, বহু জায়গায় গাছ ভেঙে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে জেলাশাসকরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, পূর্ব মেদিনীপুরের অবস্থা সবথেকে খারাপ। দিঘায় প্রবল ঝড়-বৃষ্টি, সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। একই অবস্থা মন্দারমণি এবং তাজপুরে। মন্দারমণিতে নিচু এলাকায় প্রচুর পরিমাণে নোনো জল ঢুকে গিয়েছে। ঝড়ের দাপটে প্রচুর গাছপালা পড়েছে। এখানেই শেষ নয়, ঝড়ের পর প্রবল জলোচ্ছ্বাস তৈরি হয় পূর্ব মেদিনীপুরের মন্দারমণির সমুদ্রে। বিশাল উঁচু-উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়ে মন্দারমণির সমুদ্রতটে। সমুদ্রের নোনা জল পাড় বরাবর নিচু জমিতে হু হু করে ঢুকে পড়ে। সেই এলাকার বহু চাষের জমিতেও নোনা জল ঢুকে গিয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
শুক্রবার সকালে ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শেষ হতেই অতি গবীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় দানা। তুমুল বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়। বিশেষ করে উপকূলের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অতি ভারী বৃষ্টি শুক্রবার সকাল থেকেই। তুমুল বৃষ্টি কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ একাধিক জেলায়। শুক্রবার দিনভর দফায়-দফায় দুর্যোগ চলবে। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে দানার প্রভাবে বৃষ্টির দাপট থাকবে শনিবারেও।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাশাপাশি ভদ্রক, বালেশ্বর, পুরী-সহ ওড়িশার বিভিন্ন জায়গার পরিস্থিতি শোচনীয়। স্থলভাগের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া ঝোড়ো হাওয়া তীব্র গতিতে ভিতরকণিকার দিকে এগোচ্ছে। ধামারায় ইতিমধ্যেই তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড়। তবে ভিতরকণিকার পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ৮০ হাজারের বেশি মানুষকে ইতিমধ্যেই সরিয়ে সাইক্লোন শেল্টারে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়েছে ওড়িশা সরকার।