নিউজ ডেস্ক: একটানা বৃষ্টির জেরে বানভাসি অবস্থা কলকাতার। এসএসকেএম হাসপাতাল, ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজ সহ একাধিক সরকারি হাসপাতালে জল ঢুকে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রোগী ও তার পরিজনদের ভোগান্তি একেবারে চরমে ওঠে। একাধিক হাসপাতালে দেখা যায় নিরাপত্তাকর্মীরা, স্বাস্থ্যকর্মীরা জলের মধ্য়ে দাঁড়িয়েই কাজ করছেন। একাধিক করিডরে দেখা যায় জলের মধ্য়েই কোনওরকমে রোগী ও তার পরিজনদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একাধিক বিভাগ সহ আউটডোরের একাংশেও জল জমে যায়। হয়রানির শিকার চিকিৎসা করাতে আসা সাধারণ মানুষ। যদিও জল দ্রুত বের করার জন্য কর্তৃপক্ষের তরফে পাম্প বসানো হয়েছে। কিন্তু, যে পরিমাণ জল জমেছে তাতে পাম্প চালিয়েও, দ্রুত সুরাহার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। সমস্যায় পড়ছেন চিকিৎসকরাও। জল ঢুকে যাওয়ায় কাজ করছে না লিফ্টও।
অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় দানার গতিপ্রকৃতি ও আবহাওয়ার পরিস্থিতির উপর লাগাতার নজরদারি চালাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। অথচ টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কলকাতা পুরসভা চত্বরই। এছাড়া কলকাতার অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় জল জমে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’-র প্রভাবে ভোর থেকে টানা বৃষ্টি। তার জেরে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউর বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ক্রসিং জলমগ্ন। রাস্তার এক প্রান্ত দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়। কারণ, অন্য প্রান্তে জল জমে একাকার। এর পাশাপাশি শ্যামবাজার-সহ উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ জায়গা, মুক্তারাম বাবু স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি, স্ট্র্যান্ড রোড সংলগ্ন নর্থ পোর্ট থানা সংলগ্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে। ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির ঠিক পাশে বিধান সরণিতে জমেছে জল। জল সরানোর জন্য সুপার সাকশন পাম্প পাঠানো হয় কলকাতা পুরসভা থেকে। দক্ষিণ কলকাতারও বিভিন্ন জায়গায় জল জমে গিয়েছে।
পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, এদিন ভোর পাঁচটা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত সবথেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয় যোধপুর পার্ক পাম্পিং স্টেশন জোনে। পরিমাপ ১৬৩ মিমি। তারপরই বালিগঞ্জ পাম্পিং স্টেশনে ১২৪ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে গাড়ি এবং মেশিন বসিয়ে জল বের করার কাজ করেন পুরকর্মীরা। সন্ধ্যার দিকে বাইপাস, ভিক্টোরিয়া, ময়দান চত্বর সহ কয়েকটি এলাকায় জল জমে। বৃহস্পতিবার রাতভর পুরসভার কন্ট্রোল রুমে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার সকালেও কন্ট্রোল রুমে আসেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘সকাল থেকে প্রায় ১০০ মিমিরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় জল নামতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগবে। এসএসকেএম হাসপাতালে কিছুটা জল জমেছিল। সেটা বের করা হয়েছে। নিচু এলাকায় জল জমেছে। দিনরাত এক করে কর্মীরা কাজ করেছেন।’