নিউজ ডেস্ক: নাম ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’ হলেও, গ্রেফতারির সঙ্গে দূরদূরান্তেও কোনও সম্পর্ক নেই এই শব্দবন্ধের। এটি আসলে সাইবার প্রতারণার একটি ফাঁদ। অনলাইনে জালিয়াতি চক্রের পাণ্ডাদের হাতে নতুন ‘অস্ত্র’ হয়ে উঠেছে এটি। রবিবার (২৭ অক্টোবর), তাঁর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে ভারতীয় নাগরিকদের এ সম্পর্কে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সমাজের সমস্ত অংশই এই অপরাধের শিকার হয়েছে। তদন্ত সংস্থাগুলি এই সমস্যার মোকাবিলায়, সমস্ত রাজ্যর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে। তবে, এই অপরাধ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য সচেতনতা অপরিহার্য।
‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’ নিয়ে জালিয়াতদের রমরমা যে ভাবে বেড়েছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রও। রবিবার প্রধানমন্ত্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, “ডিজিটাল গ্রেফতারির জালিয়াতি থেকে সাবধান। আইনে ডিজিটাল গ্রেফতারের মতো কোনও বিষয় নেই। এই ধরনের তদন্তের জন্য কোনও সরকারি সংস্থা ফোন বা ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে না।’’
কিন্তু কী এই ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’? কীভাবে চলে এই প্রতারণা তা দেখাতে একটি ভিডিও চালান প্রধানমন্ত্রী মোদি। ওই ভিডিওর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মোদি (PM Modi) জানিয়েছেন, প্রথমে অপরাধীরা তাদের সম্ভাব্য শিকারদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। তারপর, তারা তদন্তকারী সংস্থার কর্তাদের ভেক ধরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সাধারণ মানুষের ভয়কে তারা নিজেদের সুবিধায় কাজে লাগায়। এই ধরনের প্রতারণার ফাঁদ (Digital Arrest) থেকে সুরক্ষিত থাকতে তিনটি বিষয় মাথার রাখার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদি (PM Modi)। তাড়াহুড়োয় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার বদলে ঠান্ডা মাথায় বিষয়টি বিবেচনার কথা বলেন তিনি। তাঁর কথায়— “থামুন, ভাবুন এবং তার পরে পদক্ষেপ করুন।” প্রথমত, অযথা ভয় না পেয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে ফোনকলটি রেকর্ড করার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। সম্ভব হলে ‘স্ক্রিন রেকর্ড’ করার কথাও বলেন তিনি। দ্বিতীয়ত, মাথায় রাখতে হবে যে কোনও সরকারি তদন্তকারী সংস্থা অনলাইনে কাউকে ধমক বা হুমকি দেয় না। তৃতীয়ত, যখনই এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটবে, তা ন্যাশনাল সাইবার হেল্পলাইনে ফোন করে জানান। হেল্পলাইন নম্বরটি হল ১৯৩০। পাশাপাশি স্থানীয় থানাতেও এ বিষয়ে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেন মোদি।
উল্লেখ্য, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে সাইবার সংক্রান্ত অপরাধ উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হল সচেতনতা। এই ধরনের ফোন পাওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুলিশ হেল্পলাইন বা স্থানীয় পুলিশের সাইবার ক্রাইম দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করারও পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।