নিউজ ডেস্ক: কালো কিংবা নীল নয়, এই কালীর গায়ের রং সবুজ। পুজো পদ্ধতিও ভিন্ন। ইতিমধ্যেই হুগলির হরিপাল থানার শ্রীপতিপুর পশ্চিম গ্রামের ৭০ বছরের প্রাচীন ‘সবুজ কালী’র পুজো (Kali Puja 2024) প্রস্তুতি তুঙ্গে। এই গ্রামের অধিকারী পরিবারের আরাধ্যা ‘সবুজ কালী’ (hooghly s sabuj kali)। ভূত চতুর্দশীর রাতে ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে মায়ের কাছে মানত করেন গ্রামবাসী। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এদিন ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে মানত করলে ইচ্ছাপূরণ হয়। তাই দূর দূর থেকে বহু পুণ্যার্থী ভিড় জমান মন্দিরে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, হরিপালের দরিদ্র গোড়া বৈষ্ণব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বটকৃষ্ণ অধিকারী। তৎকালীন ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা পাশের পর চাকরি সূত্রে চলে যান ভিনরাজ্যে। তার পর ফিরে আসেন গ্রামে। চাষাবাদ শুরু করেন। পরিবারের চাপে পড়ে আঙুরবালা দেবীর সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। সংসারে ছিল না মন। মাঠে, ঘাটে, শ্মশানেই ঘুরে বেড়াতেন বটকৃষ্ণ। কথিত আছে, একবার মাঠে গরু বাঁধার সময় এক সাদা বস্ত্র পরিহিত সন্ন্যাসীকে দেখতে পান। দীক্ষার দিনক্ষণ বলে দেন সন্ন্যাসী। শ্মশানে সাধনা করতে করতে সিদ্ধিলাভ করেন। স্বপ্নাদেশ পেয়ে কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু বৈষ্ণব বাড়িতে কালীপুজো নৈব নৈব চ! তা-ও সমস্ত বাধা অতিক্রম করে তিনি বাড়িতে কালীর ঘট স্থাপন করলেন। এরপর স্বপ্নাদেশ পেয়ে কালী মূর্তি স্থাপন। রটন্তী কালীপুজোর দিন প্রতিষ্ঠিত হয় এই ‘সবুজ কালী’ (hooghly s sabuj kali)।
এই কালীপুজোর পুজো পদ্ধতি এবং ভোগেও রয়েছে হাজারও ব্যতিক্রমী ছোঁয়া। ‘সবুজ কালী’-র (hooghly s sabuj kali) পুজোয় বলি প্রথা নেই। তবে ‘সবুজ কালী’র প্রিয় জুঁই ফুল ছাড়া পুজো যেন অসম্পূর্ণ। দীপান্বিতা অমাবস্যায় বিশেষ ষোড়শ উপাচারে এই পুজো হয়। হোমও হয়। পুজোর রাতে টানা তিন ঘণ্টা বাঁশি বাজিয়ে শোনানো হয়। রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত একটানা বাজে বাঁশি। ওই দিন ভোগে আবশ্যক ইলিশ মাছ।