নিউজ ডেস্ক: যিনি মৃৎশিল্পী তিনিই নাকি সেবাইত। প্রতি বছর কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে জাঁকজমকভাবে মালদার গাজোল হাটে আদি শ্যামাকালী দেবীর ধুমধাম করে পুজো হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যিনি মৃৎশিল্পী তিনিই আবার সেবাইত। যদিও গাজোলের জমিদার বাড়ির কালীপুজো এখন সার্বজনীন হয়ে উঠেছে। গাজোল হাটের এক সময়ের জমিদার রামানন্দ চৌধুরীর পরিবারের পুজো এখন সার্বজনীন হয়ে উঠেছে। জানা গিয়েছে, বহু বছর আগে দেবী মায়ের স্বপ্নাদেশে জমিদার রামানন্দ চৌধুরী এই কালী পুজোর শুরু করেছিলেন। বর্তমানে জমিদারের বংশধরেরা আর এখানে কেউ থাকেন না । ফলে এই পুজো এখন সার্বজনীন হয়ে উঠেছে।
কার্তিক মাসের অমাবস্যার তিথিতে দেবী কালী মায়ের চক্ষুদান পর্ব আচমকা যিনি দেখতে পান, তিনি নাকি হয়ে ওঠেন সৌভাগ্যের রাজা। যদিও দেবী কালীমাতার এই চক্ষুদান পর্ব দেখার নিয়ম নেই। তবুও আকস্মিকভাবে যদি কখনও পুজো চলাকালীন ভক্তদের নজরে আসে চক্ষুদানের বিষয়টি, সেই মুহূর্তেই কালী মায়ের কাছে যা মানত করা যায়, এক মাসের মধ্যেই ফল পান ভক্তেরা। প্রায় ২৫০ বছরের মালদার গাজোলের চৌধুরী জমিদার বাড়ির কালীপুজোর (Kali Puja 2024) এমনই গল্প প্রচলিত রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মন্দিরের সেবাইত আমান কুমার ঝাঁ জানিয়েছেন, জমিদার রামনন্দ চৌধুরী পারিবারিক আদি কালীপুজোটি গাজোল হাট এলাকায় অনুষ্ঠিত হতো। বর্তমানে মালদার গাজোল হাট কমিটি উদ্যোগে আদি শ্যামাকালী পুজোটি হয়ে আসছে। তন্ত্র মতে এই পুজো হয়ে থাকে। অমাবস্যার মধ্যরাতে পুজোটি হয় এবং এই মায়ের মূর্তি অমাবস্যার দিনে বানিয়ে মাকে চক্ষুদান করা হয়। সেবাইত আমান ঝাঁ ও তার পরিবারের সদস্যরা নিজের বাড়িতেই দেবী মূর্তি বানান। তারপর সেখান থেকে মাকে ঘাড়ে করে নিয়ে এসে বেদীতে বসানো হয়। এরপর অমাবস্যা মধ্যরাতে মায়ের পুজো হয়। এই পুজোতে কয়েকশো পাঁঠাবলির প্রচলন রয়েছে। আর পুজো (Kali Puja 2024) শেষে এলাকার একটি দীঘিতে প্রাচীন নিয়ম মেনে দেবী মূর্তির বিসর্জন দেওয়া হয়।
এই পুজোকে (Kali Puja 2024) ঘিরে প্রতি বছরই ভক্তদের সমাগম ব্যাপক হারে বেড়েই চলেছে। কথিত আছে, আদি শ্যামা কালী মায়ের কাছে মন ভরে মনস্কামনা করলে, তা পূরণ হয়। আর ভক্তদের মনস্কামনা পূরণ হওয়ার কারণেই ভিড় বাড়ছে গাজোল হাটের শ্যামা কালী পুজোয়।