নিউজ ডেস্ক: তিন বছর আট মাস বয়সে দাবায় বিশ্বরেকর্ড। অনন্য সাধারণ নজির কলকাতার অনীশ সরকার। খুদে দাবাড়ু ইতিমধ্যেই ফিডে রেটিংয়ে নথিভুক্ত হয়েছে। এর আগে বিশ্বদাবায় এত ছোট বয়সে ফিডে রেটিংয়ে নথিভুক্ত হওয়ার নজির নেই। সেদিক থেকে বাঙালি ছেলেটিকে বিস্ময় প্রতিভা বলা হচ্ছে। অর্থাৎ কনিষ্ঠতম দাবাড়ু হিসাবে ফিডে রেটিং (Chess World Record) পেল বাংলার খুদে অনীশ সরকার। ভেঙে দিল ভারতেরই তেজস তিওয়ারির রেকর্ড।
নিউটাউনের বাসিন্দা শিক্ষক দম্পতির ছেলে অনীশ মাত্র ছয় মাস আগে দাবা খেলা শুরু করেছিল। বর্তমানে দিব্যেন্দু বড়ুয়ার চেস অ্যাকাডেমির সদস্য খুদে অনীশ। ছোট্ট ছাত্র সম্বন্ধে উচ্ছ্বসিত গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু ৷ বলছেন, “অসাধারণ কৃতিত্ব নিসন্দেহে ৷ এর আগে মিত্রাভ গুহর মধ্যে এই প্রতিভা দেখেছিলাম। মিত্রাভ এসেছিল চার সাড়ে বছর বয়সে। আমাদের অ্যাকাডেমিতে সাধারণত পাঁচ বছরের আগে ভর্তি নেওয়া হয় না। কিন্তু ওর বাবা, মা ছয় মাস আগে অ্যাকাডেমিতে নিয়ে এসে অনুরোধ করেছিল। আমরা কয়েকটা পরীক্ষা করেছিলাম। দেখলাম পেরে গেল। তারপর থেকেই চলছে।”
দাবার (Chess World Record) বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, ফিডে রেটিং অর্জন করতে হলে কোনও ফিডে রেটিং প্রাপ্ত দাবাড়ুকে হারিয়ে এক পয়েন্ট পেতে হবে। তার জন্য সর্বোচ্চ ২৬ মাস সময় দেওয়া হবে, পাঁচজন দাবাড়ুর বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ দেওয়া হবে। তবে অক্টোবর মাসে তিনজনের বিরুদ্ধে খেলেই সেই লক্ষ্য পূরণ করে ফেলেছে সাড়ে তিন বছর বয়সি অনীশ। গত মাসে রাজ্য স্তরের অনূর্ধ্ব ৯ এবং অনূর্ধ্ব ১৩ দুটি বিভাগের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল অনীশ। অনূর্ধ্ব ১৩ বিভাগে একটিও ম্যাচে জিততে পারেনি সে। অনূর্ধ্ব ৯ বিভাগে খেলতে নেমেও প্রথম ম্যাচে হারতে হয়। তবে সেখান থেকে দুরন্ত কামব্যাক খুদে অনীশের। পরপর দুই ম্যাচে ফিডে রেটিংপ্রাপ্ত দাবাড়ুকে চেকমেট করে সকলকে চমকে দেয় বাংলার দাবাড়ু। দুই পয়েন্ট পেয়ে ফিডে রেটিং অর্জন করা নিশ্চিত করে ফেলে সে। মাসের প্রথম দিনেই প্রকাশিত হয়েছে নভেম্বরের ফিডে রেটিং। দেখা যাচ্ছে, ১৫৫৫ পয়েন্ট রয়েছে অনীশের নামের পাশে। এত কম বয়সে আর কোনও দাবাড়ু ফিডে রেটিং অর্জন করতে পারেনি। সর্বকনিষ্ঠ হিসাবে ফিডে রেটিং পাওয়ার বিশ্বরেকর্ড এতদিন ছিল ভারতেরই তেজস তিওয়ারির দখলে। গত বছরই মাত্র পাঁচ বছর বয়সে ফিডে রেটিং অর্জন করেছিল সে।
এ প্রসঙ্গে অনীশের মায়ের কথায়, ‘ও একবার দাবা খেলতে বসলে আর উঠতেই চায় না। ওকে বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল ও কার্টুন দেখানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু ও দাবার ভিডিও দেখে।’ দাবার প্রতি এই তীব্র টান দেখেই ছেলেকে দাবার বোর্ড কিনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকার দম্পতির। তারপরই দিব্য়েন্দু বড়ুয়ার কাছে প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি করা। অনীশের মা অবশ্য এখনও প্রচার চান না। জানিয়েছেন, সাধারণভাবেই জীবন কাটাতে চান তাঁরা।