নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ভাইফোঁটা কাটিয়ে বাঙালি এবার দেবী জগদ্ধাত্রীর অপেক্ষায়। মা কালীর বিসর্জনের পরই হৈমন্তিকার আরাধনায় মেতে ওঠে বঙ্গবাসী। নদিয়ার কৃষ্ণনগর ও গঙ্গাপাড়ের শহর চন্দননগরে এখন সাজসাজ রব। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ফরাসি সরকারের দেওয়ান ছিলেন চন্দননগরের ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী। তিনি আবার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। সেবার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো দেখে তাঁর ভালো লাগে। ইন্দ্রনারায়ণের হাত ধরেই পুজো শুরু হয় চন্দননগর শহরে।
চন্দননগরের আলোর পাশাপাশি জগদ্ধাত্রী পুজোও সমানভাবে বিখ্যাত। গঙ্গাপাড়ের এই শহরের বিভিন্ন ক্লাবের পুজোয় এবছর সুরুচি, মুদিয়ালি, ত্রিধারা, হাজরা পার্কের এবছরের দুর্গাপুজোর মণ্ডপগুলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই বছর দুর্গাপুজোর অষ্টমী ও নবমী একই দিনে পড়েছিল। মূল পুজো শেষ হয়েছিল তিনদিনে। যা নিয়ে পুজোপ্রেমীদের আক্ষেপের শেষ ছিল না। তবে জগদ্ধাত্রী পুজো চারদিনে হবে। শুক্রবার ৮ নভেম্বর সপ্তমী। অষ্টমী শনিবার ৯ তারিখ। ১০ তারিখ মহানবমী। মূলত এই দিনই সাড়ম্বরে মায়ের পুজো হয়।
তবে যাই হোক, স্বাধীনতার বহু আগেই চন্দননগরে ধুমধাম করে শুরু হয় বিখ্যাত শিব মন্দির তেমাথা সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো। এই বিষয়ে মতান্তর নেই। এখানে দেবী পূজিত হন ‘রানিমা’ হিসেবে। গঙ্গাপাড়ের শহর চন্দননগরে অন্যতম পুরনো পুজো ধরা হয় ‘রানিমা’র পুজোকেই। যার পরতে পরতে লুকিয়ে রয়েছে ইতিহাস। জানা যায়, প্রায় ৮০ বছর আগে চন্দননগর শিব মন্দির তেমাথা সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু। মায়ের নাম ‘রানিমা’। এই নাম কেন? কথিত, ফরাসিদের উপনিবেশ গড়ে ওঠার সময় চন্দননগরের সব প্রতিমা সেজে উঠত সাদা ডাকের সাজে। একমাত্র এই পুজোয় মা সাজতেন একেবারে রাজরানির বেশে। সোনালি সেই সাজে মায়ের রূপ চোখ ধাঁধিয়ে দিত সকলের। সেই থেকেই ‘রানিমা’ নামটি প্রচলিত। পাশাপাশি, যেখানে এই পুজো হয় তার পাশেই রয়েছে বুড়ো শিবতলা। আজও মন্দিরে মহাদেবের পুজো হয় আগে, তার পরে শুরু হয় মায়ের পুজো।